ঢাকা: দেরিতে হলেও আমরা শিক্ষা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি। সম্প্রতি ৩৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার জয়জয়কার শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ইউনিসেফ যৌথভাবে ‘Bangladesh Primary Education Stipends: Achievements and Challenges’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা রয়েছে। যে কারণে ৪২ বছর আগে বঙ্গবন্ধু যে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেবেছিলেন আমরা তা এখন ভাবছি। সব ভালো মানুষ রাজনীতিতে যোগ দিলে হয়তো এ অবস্থা একদিন ভালোও হয়ে যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর নিখাদ দেশ প্রেমের কারণে ৩৫ হাজার বিদ্যালয় সরকারি করেছেন। শিক্ষায় গুরুত্ব দিয়ে বাজেটের আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আজকের প্রতিবেদন নিশ্চয়ই বাস্তবায়নের দাবি রাখে, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বর্তমান সরকার চেষ্টা করছে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন এসেছে তা ধরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার। অতীতে বঙ্গবন্ধু একসঙ্গে ৪০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করেছিলেন, সম্প্রতি শেখ হাসিনা একসঙ্গে ৩৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করেছেন, যা গণমুখী কর্মসূচির মধ্যে সর্ববৃহৎ না হলেও প্রথম সারির।
তিনি বলেন, বৃত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হলে দেড় হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন, এর পুরোটা হয়তো সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে চেষ্টা করা হবে যতটা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, গ্রামাঞ্চলে অভিভাবকদের অজ্ঞতা, স্কুলে প্রহার, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সৌচাগার এবং বাল্য বিবাহের কারণে ঝরে পড়ার সংখ্যা কমানো যাচ্ছে না। আমরা এখনও বাল্য বিবাহের হার কমিয়ে আনতে পারিনি। একবার একটি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলে আমাদের সমাজে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই পঞ্চম শ্রেণির আগেই বাল্য বিবাহের ক্ষতিকর দিকগুলো অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও বোঝানো দরকার।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন পিপিআরসি’র চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ’র প্রতিনিধি প্যাসকেল ভিলনোভ।
শ্যামল কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব কাজী আখতার হুসাইনসহ অন্যান্য আয়োজক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।
‘Bangladesh Primary Education Stipends: Achievements and Challenges’ প্রতিবেদনটি www.unicef.org.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৪