ঢাকা: ২০১৪ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক, ইবতেদায়ী ও দাখিলস্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণকাজ সম্পন্ন হলেও এখনো সম্পূর্ণ বিল পায় নি মুদ্রন প্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধের জন্যে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
বাংলাদেশ মুদ্রণশিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম শাহ আলম বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে সৃষ্ট নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যেও সদস্য মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশের সকল উপজেলায় যথাসময়ে বই পৌছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, গত অক্টোবরে টানা হরতাল, অবরোধ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে স্থবির ছিল পরিবহন খাত। তবে সীমাহীন দুর্ভোগ সত্বেও স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ৩/৪ গুণ অধিক ট্রাকভাড়া প্রদান করে শতভাগ ঝুঁকি নিয়ে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানসমূহ এনসিটিবি’র নির্দেশনা মোতাবেক পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দিয়েছে।
কিন্তু জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) অদ্যাবধি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ কাজের বিল পরিশোধ করছে না।
দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কার্য সম্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। অথচ এনসিটিবি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য বিল পরিশোধ করছে না বলে অভিযোগ মুদ্রণ সমিতির।
কার্যাদেশপ্রাপ্ত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যাদেশে উল্লেখিত পরিমান অর্থ ঋণ গ্রহন করে যথাযথভাবে কাজটি সম্পন্ন করা সত্তে¡ও সময়মত বিল না পাওয়ার কারনে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
শাহ আলম বলেন, ইতোমধ্যে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক থেকে সুদসহ সমুদয় পাওনা পরিশোধের জন্য সংশ্লিষ্ট মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান সমূহে বার বার তাগিদপত্র প্রদান করছে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের আর্থিক সংকটের কথা বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে মানবিক কারণে সকল মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিশোধ করার জন্য সমিতি থেকে সর্বশেষ অনুরোধ এনসিটিবিকে জানিয়ে পত্র দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে শাহ আলম বলেন, ২৩ তারিখের মধ্যে প্রাপ্ত মুদ্রণ বিল পরিশোধ করা না হলে সমিতি সদস্যদের মতামত নিয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণে বাধ্য হবে এবং এ বিষয়ে সমিতি শিক্ষামন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
সব মিলিয়ে ৪০০ টি প্রতিষ্ঠানের ২০ থেকে শতভাগ বিল বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে বিল বকেয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মুদ্রণের এ অর্থ আসে মঞ্জুরি খাতের বরাদ্দ থেকে।
চাহিদার মোট ৪১৬ কোটি টাকার বরাদ্দ থেকে এখন পর্যন্ত ৩ কিস্তিতে ৩১২ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠান মালিকদের দেয়া হয়েছে। চতুর্থ কিস্তির টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে। সমিতি বিষয়টি জেনেও এখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে। আবার অর্থবছর শুরু হয় জুন-জুলাই থেকে। এ কারণে বরাদ্দ ও প্রাপ্তিতে সময়ের কিছু হেরফের হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৪