ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবিতে ক্যাম্পাস খোলার পর ফের আন্দোলনের ঘোষণা

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৪
রাবিতে ক্যাম্পাস খোলার পর ফের আন্দোলনের ঘোষণা

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন থেকে এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন তারা।



শনিবার বিকেলে রাজশাহী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

১০ মার্চ গত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যহারের দাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করা হবে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন সুজন।

সুজন বলেন, সান্ধ্যকোর্স একটি সাময়িক সনদ মাত্র। এটি কোনো মৌলিক শিক্ষা নয়। জ্ঞান উৎপাদনের কোনো সুযোগ নেই। ফলে কোর্সে নামে সনদ বিক্রিই প্রধান লক্ষ্য। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ঘাটতি পুষিয়ে নিতে বিভিন্ন অজুহাতে আয় বাড়ানো যৌক্তিক কারণ হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি, এখানে জনগণের ট্র্যাক্সের পয়সায় আমার জ্ঞান অর্জন করি। সেখানে শিক্ষকরা অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে নিজেদের গবেষণা, জ্ঞান চর্চা বাদ রেখে সান্ধ্যকোর্সের ক্লাস গ্রহণ করবেন, আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করবেন তা যৌক্তিক নয়।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের যদি আন্তরিকতা থেকেই থাকে তাহলে প্রতি বছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে ঝরে পড়ে। তারা তো এইসব শিক্ষার্থীদের মৌলিক জ্ঞান র্চচা অর্জনের সুযোগ করতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না?

মাত্র সাতটি বিভাগে ৩৫০ জন শিক্ষার্থীকে সান্ধ্যকোর্স ভর্তি করিয়ে প্রশাসন যে সাফাই গাইছে তা মূলত অর্থের লালসার জন্য। এতে ছাত্ররা টাকা দিয়ে সনদ অর্জন করবে, তাই শিক্ষকদের শ্রদ্ধার সম্পর্ক থাকার প্রশ্নই উঠে না।

বর্ধিত ফি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে দাবি করে সুজন বলেন, অনির্দিষ্টকালের ছুটি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেমন সান্ধ্যকোর্সে ভর্তি করিয়েছে, ঠিক তেমনি প্রথম বর্ষের অতিরিক্ত ফি’ও আদায় করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি বৃদ্ধি করা বাস্তবতা বিবর্জিত উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ জোগানোর দায়িত্ব সরকারের আর বাজেট বাড়িয়ে সমস্যা সমাধান সঠিক রাস্তা বলে আমরা মনে করি।

বাণিজ্যিক সান্ধ্যকোর্স বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আলমগীর হোসেন সুজন বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র আন্দোলনে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রলীগ ও পুলিশ যে হামলা চালিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যহারের দাবিতে আগামী ১০ মার্চ কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি পালন করা হবে।

পরের দিন ১১ মার্চ শহীদ শামসুজ্জোহার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বাণিজ্যিক সান্ধ্যকোর্স বিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করা হবে। এরপরও প্রশাসন যদি আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া তাহলে পরের দিন থেকে আমাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাকিং বিভাগের সোহরাব হোসেন, বাংলা বিভাগের আসাদুজ্জামান আসাদ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের আয়তুল্লাহ খোমেনী, সমার্জকর্ম বিভাগের গোলাম মোস্তফা, পরিসংখ্যান বিভাগের আবু হুরাইরা, সমাজকর্ম বিভাগের উৎসব মোসাদ্দেক প্রমুখ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংবাদ সম্মলনে ১০ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পরীক্ষা চালু হওয়া ও সান্ধ্যকোর্স সচল রাখার ঘোষণা দেয়।

বংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।