ঢাকা: অংশীজনের ভূমিকাকে মূল্যায়ন না করে অতিথি কর্মকর্তাদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই প্রেষণে নিয়োগ বন্ধ করে সর্বস্তরে পদোন্নতি দরকার।
শনিবার বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নেতারা আট দফা দাবি তুলে ধরে এসব কথা বলেন।
আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব দাবি পূরণে জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনে সব ধরনের বৈষম্যও দূর করার দাবি জানান তারা।
দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও এলজিইডি ভবনে আয়োজিত ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সাফল্য অর্জনে অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বতন্ত্র ক্যাডার, প্রেষণে নিয়োগ বন্ধ করে সর্বস্তরে পদোন্নতি, সার্বজনীন নিয়োগ বিধি, বেতন স্কেল বৈষম্য দূরসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নেতারা।
দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার শিক্ষকদের প্রতি কর্তব্য পালনের আহ্বান জানান। এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতি, পেশার প্রতি দরদ বাড়াতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বিপ্লব ঘটিয়ে লাভ হবে না। কর্তব্য পালন করুন, জাতি আপনাকে মূল্যায়ন করবে। সরকার প্রধান শিক্ষা বান্ধব। আপনারা মূল্যায়ন পাবেন।
মন্ত্রী শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, দাবিগুলো এখনই মেনে নিলাম বলতে পারলে আমি খুশি হতাম। আপনারা জানেন কোথায় সমস্যা রয়েছে। কোথায় হোঁচট খেয়েছেন।
আমি সচিবকে বলছি, কোন কাজ করলে দাবিগুলো মেনে নেওয়া যায় তা লিখে আনেন আমি স্বাক্ষর করে দেবো।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় কম বেশি ফাঁকি হচ্ছে অথবা কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রয়োজনীয় যত্ন নিচ্ছি না। মন্ত্রী এ সময় স্কুল পরিদর্শনে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ প্রাইমারি এডুকেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নবী হোসেন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব কাজী আখতার হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব তার বক্তব্যে প্রাথমিক শিক্ষার প্রসারে অংশীজনের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নে অংশীজনের ভূমিকাই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে হলে অংশীজনের গুরুত্ব বাড়াতে হবে। তিনি অনুষ্ঠানে জানান, এরপর আর একটি ক্যাডার তৈরি হলে তা প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডারই হবে।
তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠীকে আলাদাভাবে সরকারের পক্ষে দেখা অনেক সময় সম্ভব হয় না। আর্থিক বিষয়ও জড়িয়ে থাকে। তবু প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, ২০০৯ সালে ক্যাডার করার সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তা থেমে যায়। পরবর্তীকালে ক্যাডারের বিষয়টি বাইরে রেখে পদোন্নতির বিষয় নিয়ে এগিয়েছিলাম।
প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার হতে হলে এন্ট্রিপোস্ট কোনটি হবে? প্রশ্ন রেখে শ্যামল কান্তি ঘোষ বলেন, সে জায়গায় সবাইকে ঐক্যমতে আসতে হবে।
কর্মচারীদের জন্য আলাদা নিয়োগ বিধি করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা প্রথম শ্রেণীতে আছেন তাদের জন্য একটি নিয়োগ বিধি আর যারা প্রথম শ্রেণীতে নেই তাদের জন্য একটি নিয়োগ বিধি করা প্রয়োজন হবে। তবে এ ক্ষেত্রেও আপনাদের ঐক্যমতে পৌঁছা দরকার।
বাংলাদেশ সময় : ১৪০৫ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৪