জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ভিলেজ লাইন পরিবহন শ্রমিকদের হামলার ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহার পদত্যাগ দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
তবে অধ্যাপক তপন কুমার সাহার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের অভিযোগ ও ছাত্রলীগ কেন হঠাৎ করে প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পদত্যাগ চাইছে সে বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি একথা জানান।
ফারজানা ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রক্টরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের যে অভিযোগ সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব। কিন্তু পাশাপাশি ছাত্রলীগ কেন হঠাৎ করে প্রক্টরের পদত্যাগ চাইছে সে বিষয়টিও ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
তিনি আরও বলেন, আগে ছাত্র ও ছাত্র-সংগঠনগুলোর বিষয়ে তেমন খোঁজ রাখা হতো না। এখন থেকে নিয়মিত তাদের খোঁজ রাখতে হবে।
বেশ কয়েকদিন যাবৎ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে দ্বন্দ বিরাজ করছিল। এরই জের ধরে এ ঘটনার উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সব সময় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু বর্তমান প্রক্টর ছাত্রলীগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা অপচেষ্টা করছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই আমরা তার পদত্যাগ দাবি করে প্রক্টর অফিসের তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা তালা খুলে দিয়েছি।
নেতা-কর্মীরা আরও জানান, নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য তার মাধ্যমে প্রশাসন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে কয়েকজন নেতাকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এদিকে ওই ঘটনার জের ধরে সোমবারই প্রক্টর অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় বুধবার সকালে জরুরি সিন্ডিকেট সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি আলোচনার সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন সিন্ডিকেট সদস্যরা।
রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেনকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপাচার্য বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতারা প্রক্টর অফিসের তালা খুলে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ বলেন, উপাচার্যের আশ্বাসের উপর আমরা শ্রদ্ধাশীল। তার আশ্বাসের উপর ভিত্তি করে প্রক্টর অফিসের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে।
সভাপতি মাহমুদুর রহমান বলেন, উপাচার্য আমাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আমরা দাবি আদায়ে অনড় থাকব।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৪