ঢাকা: মানসম্মত শিক্ষার জন্য যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘শিক্ষার মানোন্নয়নে পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের আয়োজনে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূইয়া।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শিক্ষার মান উন্নয়নের নামে পাশের হার বাড়ানো ও হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে জিপিএ ফাইভ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদেরকে বলে দেওয়া হচ্ছে, যা-ই লেখা থাক না কেন উত্তরপত্র মূল্যায়নে যেন বেশি নম্বর দেওয়া হয়।
এর ফলে বহু শিক্ষার্থী জিপিএ ফাইভ পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। এ কারণে দেশের সন্তানেদেরকে মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বসে পড়বে। এছাড়া শিক্ষকদের মর্যাদা ও প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেওয়া ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়নে বিকল্প পথ নেই বলে বক্তারা মনে করেন।
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো জাতি যদি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়, তাহলে সেই জাতি আর পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বনিম্ন অবস্থানে রাখা হয়েছে।
দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষকদের মর্যাদা ও তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না।
সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের শিক্ষা আইসিইউ না মর্গে রয়েছে তা এখনই বিবেচনার বিষয়। শিক্ষাকে বাঁচানোর জন্য শিক্ষকদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছদরুল আমিন বলেন, শিক্ষকরা ইচ্ছে করে কোনো শিক্ষার্থীকে ফেল করান না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। শিক্ষার্থীরা ফেল করার পেছনে কারণগুলো বের করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হয়েছে। একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে সবার আগে শিক্ষাকে ধ্বংস করতে হয়। ৭১ সালের মতো আজকেও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের জন্য পায়তারা চলছে।
সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম ওবায়দুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি, সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন বাদল, কলেজ শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর হোসেন, মাদ্রসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘন্টা, অক্টোরব ১৩, ২০১৪