ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা: সিদ্ধান্ত জানালেন না মন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৪
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা: সিদ্ধান্ত জানালেন না মন্ত্রী ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: জেএসসি-জেডিসি’র দুই দিনের পাঁচটি পরীক্ষা হরতালের মধ্যে পড়লেও ওই পরীক্ষাগুলো স্থগিত বা পেছানোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানাননি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

আগামী রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র মাদ্রাসা সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।



অষ্টম শ্রেণির পাঠ শেষ করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ২ নভেম্বর থেকে সারা দেশে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ১৮ নভেম্বর।

মানবতাবিরোধী অপারাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতি, রোব ও সোমবার হরতাল ডেকেছে দলটি।

রোববার জেএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র এবং জেডিসিতে কুরআন মজিদ ও তাজবিদ পরীক্ষা ছিল।

এছাড়া সোমবার (৩ নভেম্বর) জেএসসিতে বাংলা দ্বিতীয়পত্র; জেডিসিতে আত-তাওহীদ ওয়াল ফিকহ এবং আকাইদ ও ফিকহ পরীক্ষা হওয়া কথা।

এই পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থী-অভিভাবকেরা।

জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আন্ত:মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিয়ে বুধবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ওই সব পরীক্ষার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভবিষত প্রজন্মের জন্য আমরা পরীক্ষা পেছাব কেন? যারা হরতাল দিয়েছে তারা বাধা সৃষ্টি করার জন্য দিয়েছে, যাতে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া-পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হয়।

‘যারা হরতাল ডেকেছে তারা কারা, তারা আজকে আদালতের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে জাতির বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়ে অপরাধ করেছে। এই হরতালের কোন যৌক্তিকতা নেই। আমরা বলব, আমাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষতের পথে বাধা সৃষ্টি করবেন না। তারা হরতাল প্রত্যাহার করুক। ’

হরতাল প্রত্যাহার না করা হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিষয়টাকে এখনই বিবেচনায় নিচ্ছি না। আগে বলব হরতাল হটাও। একাত্তরে মানুষ হত্যা করে জাতিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন, আজকে ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা ধ্বংস করে ভবিষত ধ্বংস করতে চান? তারা একাত্তরে যে ভূমিকা রাখছিলেন, সেই ভূমিকার মত বাধা সৃষ্টি করবেন তা আমরা চাই না। পরীক্ষা যাতে নির্বিঘ্নে হতে পারে সেজন্য সমস্ত জাতির কর্তব্য। ’

পরীক্ষার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না হলে পরীক্ষার্থী-অভিভাবকরা উদ্বেগে থাকবেন- ‘এ ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, উদ্বেগ তো আমরা সৃষ্টি করিনি। আমরা এখনও পরীক্ষা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেইনি। আমরাও তো উদ্বিগ্ন। ’

জেএসসি-জেডিসিতে এবার মোট ২০ লাখ ৯০ হাজার ৬৯২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেবে।

এর মধ্যে জেএসসিতে ১৭ লাখ ৬৪ হাজার ৫৯৫ জন এবং জেডিসিতে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭ জন।

যদি হরতাল প্রত্যাহার না করে- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি’র কোন উত্তর দেওয়া যাবে না।

গত বছরের জেএসসি-জেডিসির কয়েকটি পরীক্ষাও বিএনপি-জামায়াতের হরতালের কারণে পিছিয়ে যায়।

প্রশ্ন ফাঁস রোধে জিরো টলারেন্স

পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

বিকালে জেএসসি-জেডিসির পরীক্ষা নিয়ে ওই সভায় শেষে মন্ত্রী বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রশ্ন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা এ ধরনের কার্যক্রম করলে জিরো টলারেন্স। এই বিষয়ে কেউকে ছাড় দেব না।

ফেসবুকে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, অভিভাবক, দায়িত্বশীল শিক্ষক, শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন শিক্ষার্থীদের দয়া করে বলবেন তারা যেন বিভ্রান্ত হয়ে তাদের প্রস্তুতি ও ভালো করার চেষ্টা যেন বাধাগ্রস্ত না করে।

শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান, তারা যেন ভূয়া প্রশ্নপত্রের পেছনে না ছোটে। প্রশ্ন আউট হয়েছে শুনেও তারা যেন তা অগ্রাহ্য করে। প্রশ্ন ফাঁসের খবর পেলে আমাদের জানাবেন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

যে সব স্থান থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয় সে সব জায়গাগুলোর মধ্যে কোচিং সেন্টারগুলোর উপর নজরদারি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই নজরদারি আরো বাড়ানো হবে। তবে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হবে না। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকবৃন্দের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করা হবে।

উচ্চ ক্ষমতার কমিটি
পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন বিষয় তদারকি করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইনের নেতৃত্বে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওই কমিটিতে রাখা হবে।

শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান, শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তাসলিমা বেগম; মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রতিনিধি, বিটিআরসি, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার এবং বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৪

** উদ্বিগ্ন জেএসসি-জেডিসির ২১ লাখ পরীক্ষার্থী
** হরতালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।