ঢাকা: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষাগুলো হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এসব দিনের নির্ধারিত পরীক্ষাগুলোর পরিবর্তিত তারিখ পরে জানানো হবে।
রোববার (২৯ মার্চ) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী এ কথা জানান।
আগামী ২৮ এপ্রিল ওই তিন সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আগামী বুধবার (১ এপ্রিল) থেকে সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সূচি অনুযায়ী ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিল বিভিন্ন বোর্ডে পরীক্ষা রয়েছে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মুভমেন্টের কারণে শিক্ষামন্ত্রী ২৬ থেকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
সভায় এর আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ২৮ এপ্রিল নির্বাচনের আগে-পরে চারদিন পরীক্ষা না রাখার জন্য মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানানো হয়। উপস্থিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা পরীক্ষা গ্রহণে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার প্রস্তুতির কথাও জানান।
এসএসসি পরীক্ষা হরতালের মধ্যে না নিলেও এবার এইচএসসি পরীক্ষা হরতাল হলেও নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন, সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নিতেই হবে। যা কিছু ঘটুক, নির্ধারিত সময় ১ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। এসএসসির মতো ফাঁকে ফাঁকে পরীক্ষা নিলে শেষ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমর্থন দিয়েছেন। অভিভাবকেরা ফোন করে বলেছেন, বেস্ট ডিসিশন।
এসএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল না দেওয়ার আহবানের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এতো চিৎকার করলাম, অন্তত পরীক্ষার আগে-পরে দুই ঘণ্টা হরতাল দেবেন না। কেউ তা আমলে নেননি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আর সর্বনাশের পথে যাবেন না। হাত গুটিয়ে নিন। দয়া করে সবাই সতর্ক থাকবেন, যেন নিরাপদে পরীক্ষা হয়।
প্রশ্ন ফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব সৃষ্টি করলে পাবলিক পরীক্ষা আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
সভায় পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার এবং পরীক্ষা কেন্দ্র এলাকায় ফটোকপির দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিগত তিন মাসে হরতাল-অবরোধে শিক্ষাব্যবস্থার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য যা যা করার দরকার করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন বোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন), পুলিশ-র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত থেকে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫