ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

জবির বাজেট সংকট

আটকে আছে শিক্ষকদের সাড়ে তিন কোটি টাকা

ইমরান আহমেদ,জবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৫
আটকে আছে শিক্ষকদের সাড়ে তিন কোটি টাকা

জবি: প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ায় অর্থ সংকটে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের অন্যতম এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে সংশোধনী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ায় আটকে আছে শিক্ষকদের সাড়ে তিন কোটি টাকার পারিতোষিক ভাতা (খাতা দেখার সম্মানি) ।



সেই সঙ্গে ঘাটতি রয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের মৌলিক প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও সাধারণ আনুষঙ্গিক খাতে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১০১৪-১৫ অর্থ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল বাজেট ধরা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। প্রারম্ভিক উদ্বৃত্তসহ (বিগত বছরের অব্যবহিত) এ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছিল ১৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে বর্তমান অর্থবছরের আয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

নিজস্ব আয়ের বাহিরে বাকি টাকার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পাওয়া গেছে ৩৩ কোটি টাকা। রাজস্ব আয় (বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় এবং ইউজিসি’র বরাদ্দকৃত টাকা) আর সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ পাওয়ার আশায় ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঘাটতি রেখেই মূল বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ না পাওয়ায় বর্তমান অর্থবছর শেষ হওয়ার দুই মাস আগেই অর্থ সংকটে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
 
সূত্র জানায়, শিক্ষকদের পারিতোষিক খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না থাকায় গত ২৫ মার্চ অর্থ কমিটির ২৫তম সভায় শিক্ষকদের মোট পাওনা থেকে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৩৪২ টাকা পরিশোধ করার পরও এ খাতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ঘটতি রয়ে যায়।

ঘটতির কথা জানিয়ে ইউজিসিকে চিঠি দিলেও সংশোধনী বাজেটে বরাদ্দ না পাওয়ায় শিক্ষকদের পারিতোষিক ভাতা বাবদ ৩ কোটি ৪৯ লাখ ৮১ হাজার ২৫৮ টাকা পরিশোধ করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে চাহিদা মেটানোর জন্য এক খাতের টাকা অন্য খাতে সমন্বয় করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবি’র এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বাজেট ঘটতি হওয়ায় বিভিন্ন খাতের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সিন্ডিকেটের অনুমতি ছাড়াই এক খাতের টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দফতরের উপ-পরিচালক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড একাউন্টস) ড. সৈয়দ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, খাতের সমন্বয় না করলে অর্থাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচল অবস্থা বিরাজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা নির্দিষ্ট সময় পরপর হয়। এ জন্য অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় খাত থেকে অধিক প্রয়োজনীয় ঘটতি খাতে বাজেট সমন্বয় করা হচ্ছে।

ইউজিসি’র বাজেট বরাদ্দে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক প্রয়োজনের এক-তৃতীয়াংশ বাজেটও ইউজিসি থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। বিগত ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে সংশোধিত বাজেটে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও এ বছর এক টাকাও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

ড. সৈয়দ আহমেদ জানান, বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আয় ধরা হয়েছিল প্রারম্ভিক উদ্বৃত্তসহ ১৭ কোটি  ৭৫ লাখ টাকা। কিন্তু আয় ২৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা কম হয়েছে।

আয় করে ব্যয় নির্বাহ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব না বলে জানান তিনি।

২০১৫-১৬ প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী অর্থ বছরের জন্য ইউজিসি’র কাছে ৬৩ কোটি ১০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষকদের পারিতোষিক ভাতা মেটাতে ৮ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ঘটতি বাজেট পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সংশোধনী বাজেটে কোনো বরাদ্দ না দেওয়ার বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন, গত দুই বছর যাবৎ ঘাটতির মধ্যেই চলছে।

বাজেটের সমন্বয়ের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য মীজানুর রহমান সাক্ষাতে কথা বলতে বলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৫
আইএএ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।