ঢাকা, সোমবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ধুনটে বাগদী পল্লীর পাঠশালায় পাঠদান বন্ধ

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৯ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৫
ধুনটে বাগদী পল্লীর পাঠশালায় পাঠদান বন্ধ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ধুনট (বগুড়া): গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ড পরিচালিত বগুড়ার ধুনট উপজেলার কুঠিবাড়ি বাগদী পল্লীর গণ পাঠশালার শিশু শিক্ষার্থীদের চার মাস ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

বুধবার (৬ মে) সকাল ১১টার দিকে ধুনট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) নুরুল আমীন মণ্ডল বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।



স্থানীয়রা জানান, ধুনট সদরের কুঠিবাড়ী বাগদী পল্লীতে বাস করেন সমাজের সুবিধা বঞ্চিত বাগদী পরিবারের লোকজন। তৎকালে ভারতের বর্ধমান এলাকা থেকে নীলকররা নীল চাষের শ্রমিক হিসেবে এই বাগদীদের এদেশে নিয়ে আসেন।

পরে নীল চাষের বিলুপ্ত ঘটায় বাগদীরা এখানেই বসবাস শুরু করেন। কিন্তু তাদের ছিল না কোন সামাজিকতা। শিক্ষা, সাংস্কৃতিসহ সব বিষয় থেকেই তারা বঞ্চিত। অভাব-অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। বেঁচে থাকার তাগিদে কুলি, মজুর, রিকশা-ভ্যান চালকসহ বিভিন্ন পেশায় জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। সন্তানদের লেখাপড়ার কথা বাগদী পরিবারের লোকজন ভাবতেই পারতেন না।

এই অভাবী জনপদের শিক্ষা বঞ্চিত শিশুদের জন্য ২০০৪ সালে গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ড প্রকল্প নামে একটি বেসরকারি সংস্থা গরীবের শিক্ষা ও মুক্তির লক্ষ্যে গড়ে তোলেন কুটিবাড়ী বাগদীপাড়া গণ পাঠশালা।

তখন কুঠিবাড়ি গ্রামের সুবল চন্দ্র রায় ও বৈদ্যনাথ রায় পাঠশালার নামে নিঃশর্তে নয় শতক জমি লিখে দেন। সেখানে গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের অর্থায়নে পাঠশালার জন্য টিনের তৈরি ঘর উঠানো হয়। সেই থেকেই ওই পাঠশালায় শিক্ষা বঞ্চিত হতদরিদ্র শিশুরা লেখাপড়া করে।

পাঠশালায় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সরকারি পাঠ্যবই দিয়ে লেখাপড়া করে। পাঠশালায় চারজন শিক্ষিকা ও ২শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে এই পাঠশালায় শিশুদের পাঠদান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

পাঠশালার শিক্ষিকা দিলারা খাতুন ও মুন্নি সাহা বাংলানিউজকে জানান, পাঠশালার জমিদাতা সুবল চন্দ্র রায় মোটা অংকের টাকা দাবি করেছেন। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তিনি পাঠশালার ঘর দখল করে নিয়েছেন। এরপর থেকে পাঠশালায় শিশুদের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

জমিদাতা সুবল চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে জানান, পাঠশালাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে কর্তৃপক্ষ ঘর ভাড়ার টাকা বাকী রেখেছেন। সেই টাকা পরিশোধ না করায় তিনি ঘর দখল করে নিয়েছেন।

ধুনট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) নুরুল আমীন মণ্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পরিচালিত ওই পাঠশালার শিশু শিক্ষার্থীদের সরকারি পাঠ্যবই সরবরাহ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনি পরীক্ষায় শিক্ষাথীরা অংশগ্রহণ করে। ওই পাঠশালায় শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান পুরনায় চালু করার প্রক্রিয়া চলছে।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।