ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষকের প্রতারণা, পরীক্ষা দিয়েও ফল পায়নি মাহফুজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৫
শিক্ষকের প্রতারণা, পরীক্ষা দিয়েও ফল পায়নি মাহফুজ

ফেনী: ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় এক ছাত্রের নাম কেটে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অন্য এক ছাত্রের নাম বসিয়ে ফরম পূরণের অভিনব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।

এতে দাখিল পরীক্ষা দিলেও ফলাফল তালিকায় নাম আসেনি মাহফুজুর রহমান নামে এক ছাত্রের।

এ নিয়ে এলাকার ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গত শনিবার সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। অন্যদের মতো দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র মাহফুজুর রহমান ফলাফল আনতে যায়। কিন্তু তার রোল (২৬৪১৯১) নম্বরে তার নামের পরিবর্তে বিবি মমতাজ নাম দেখে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাপাচা দিতে দৌঁড়ঝাপ শুরু করে। শেষে সোমবার (০১ জুন) এক সালিশ বৈঠকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করতে চাইলেও রাজি হয়নি মাহফুজের পরিবার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ চন্ডিপুর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অনুমোদন থাকায় ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীরা একই এলাকার দাগনভূঞা আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের দাখিল পরীক্ষার জন্য দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার ৭ ছাত্র-ছাত্রী ফরম পূরণ করে।

কিন্তু ভুলবশত এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করা হয়নি। ওই ছাত্রীর পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের চাপে ও উৎকোচের বিনিময়ে চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন, সহকারী শিক্ষক ফরিদ ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের শরণাপন্ন হলে আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ মজুমদার ফরমের সংশোধনীতে মাহফুজুর রহমানের নাম কেটে ওই ছাত্রীর নাম বসিয়ে দেন।

পরে ছলচাতুরির মাধ্যমে চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন ও সহকারী শিক্ষক ফরিদ (২৬৪১৯১) রোল নম্বর সম্বলিত একটি ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে মাহফুজকে দেয়। ওই প্রবেশপত্র দিয়েই পরীক্ষা দেয় সে।

এদিকে, এ ঘটনা কাউকে জানালে বা কোনো প্রতিবাদ করলে আগামীতে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না মর্মে ওই ছাত্রকে হুমকি দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকরা।

জানতে চাইলে দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার সুপার আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ওই ছাত্র আমাদের না, সে আজিজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।

তবে আজিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফারুক আহম্মেদ মজুমদার বলেন, দক্ষিণ চন্ডিপুর মাদ্রাসার শিক্ষকেরা যেভাবে করতে বলেছেন , তিনি সেভাবে করেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা জানান, এখনো এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৫ 
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।