ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

‘অপুষ্টিকে বাণিজ্যে পরিণত করছে আইসিডিডিআরবি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৯ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৫
‘অপুষ্টিকে বাণিজ্যে পরিণত করছে আইসিডিডিআরবি’

ঢাকা: অপুষ্টি দূর করতে আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এর উদ্ভাবিত থেরাপিউটিক ফুড (রোগ-প্রতিরোধে বিশেষভাবে তৈরি খাদ্য) শিশু স্বাস্থ্যের জন্যে অপ্রয়োজনীয় বলে অভিযোগ করেছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, শিশুর অপুষ্টিকে বাণিজ্যে পরিণত করছে আইসিডিডিআরবি।



সোমবার (২২ জুন) বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তারা এ অভিযোগ করেন।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. এস কে রায়।

তিনি বলেন, শিশুর অপুষ্টি দূর করতে দেশীয় উপাদানে তৈরি নতুন পথ্য রেডি টু ইউজ থেরাপিউটিক ফুড (আরইউটিএফ) সংক্রান্ত আইসিডিডিআরবি-এর গবেষণার তথ্য উপাত্ত ভুল।

‘আইসিডিডিআরবি-এর আরইউটিএফ খাবারে দেশীয় উপাদানে গুঁড়ো দুধ মেশানো হচ্ছে। ব্রেস্ট মিল্ক সাবস্টেটিউট (বিএমএস) রেগুলেশন অ্যান্ড মার্কেটিং অ্যাক্ট-২০১৩ অনুসারে গুঁড়ো দুধকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু আরইউটিএফ খাবারে গুঁড়ো দুধ মিশিয়ে বিএমএস আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে। ’

‘শিশুর অপুষ্টিকে বাণিজ্যে পরিণত করছে আইসিডিডিআরবি,’ বলেন তিনি।

ড. এস কে রায় বলেন, বিএমএস অ্যাক্ট অনুসারে শূন্য থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের শুধুমাত্র বুকের দুধ এবং ছয়মাস থেকে দুই বছর শিশুদের বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর কথা বলা রয়েছে।

আরইউটিএফ প্রসারের পেছনে গুঁড়ো দুধের বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান বলেন, দেশের অপুষ্টির শিকার শতকরা ৯০ ভাগ শিশুর ধরনের কৃত্রিম (সিনথেটিক) খাবারের কোনো প্রয়োজন নেই। একমাত্র ঘরে তৈরি খাবারের মাধ্যমে শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করা সম্ভব।

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এম কিউ তালুকদার বলেন, অপুষ্টি কোন রোগ নয়। খাদ্যে নিরাপত্তার অভাব, রোগ নিয়ন্ত্রণ না হলে ও চিকিৎসা এবং সেবা যত্নের ঘাটতির কারণে শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। অপুষ্টি রোগ-জীবাণুতে সৃষ্ট কোনো সমস্যা নয়।

‘অপুষ্টির শিকার ৯০ ভাগ শিশুকে ঘরে তৈরি খাবারের মাধ্যমে চিকিৎসা সম্ভব’ উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘তীব্র অপুষ্টির শিকার মাত্র ১০ ভাগ শিশুর চিকিৎসা এন্টিবায়েটিক দিয়ে হাসপাতালে করা হয়। ’

সভায় জানানো হয়, গত ৯ জুন পুষ্টি বিষয়ক আন্তজার্তিক সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশীয় উপাদানে তৈরি নতুন পথ্য সম্পর্কিত তথ্যের প্রকাশ করে আইসিডিআরবি।

গবেষকরা দাবি করেন, ওই পথ্যে (আরইউটিএফ) ৮০ শতাংশ শিশুর অপুষ্টি দূর হয়েছে।

আইসিডিডিআরবি জানায়, কুড়িগ্রামে টেরে দেস হোমস ক্লিনিক এবং ঢাকার বাড্ডা বারনেনের ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা ৩২৭ জন শিশুর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়।

ফ্রান্সের নিউট্রিসেট এবং ইউনিসেফ-এর অর্থায়নে আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানীরা তিন বছর ধরে এ গবেষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৫
এমএন/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।