ঢাকা: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে পিএসসির আদলে পৃথক বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন কমিশন (এনটিএসসি) গঠন আগামী একমাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
পৃথক এ কমিশন গঠন করা হলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বিলুপ্ত করা হবে।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী জানান, সরকারি অনুদান ও আর্থিক সহায়তা পাওয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ি মাদ্রাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা’২০০৬ সংশোধন বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন (এনটিএসসি) গঠনে আমাদের আরো কিছু সময় লাগবে। ২০০৬ সালের বিদ্যমান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা সংশোধনের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারি।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, সরকারি অনুমোদন ও আর্থিক সহায়তাপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর টাকার খেলা চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পরিষদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষকেরা অনেক সময় প্রতিষ্ঠানে চাকরি পান না। সরকার এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে চায়। তাই বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। কমিশন গঠন করতে একমাসের মতো সময় লাগবে। কিছু কম বেশি হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কমিশন পিএসসির মতো শিক্ষক বাছাই করবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা অনুসারে কমিশনই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক বাছাই করবে।
কমিশন গঠনের মাধ্যমে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে এক ধাপ অগ্রগতি হবে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, বছরের শেষভাগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে শিক্ষকের চাহিদা সম্পর্কে কমিশন অবহিত হবে। আর বছরের শুরুতে সে অনুপাতে কমিশন শিক্ষক বাছাই করবে। এতে করে চাহিদা আর নিয়োগের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকবে।
বর্তমানে প্রায় ৩ লাখের বেশি নিবন্ধিত শিক্ষক রয়েছেন। তাদের সমন্বয় করতে প্রায় তিন বছর লাগবে বলে মনে করেন শিক্ষা সচিব। এরপর চাহিদার ভিত্তিতেই শিক্ষক বাছাই করবে কমিশন বলেও উল্লেখ করেন শিক্ষাসচিব।
শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শিক্ষক নিয়োগের নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করে অনির্দিষ্টকাল বসে থাকার সুযোগ থাকছে না। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করার পর তা তিন বছর কার্যকর থাকবে। তিন বছর পর তাকে আবার পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, ৪০ হাজার শূন্যপদের বিপরীতে শিক্ষক নিবন্ধনের ১২টি পরীক্ষায় ৫ লাখ ৪০ হাজার ৩২৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। চাকরি পেয়েছেন ৬৩ হাজার ৪২ জন। আর চাকরি পাননি (অপেক্ষমান) ৪ লাখ ৭৭ হাজার ২৮৭ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৫
এসএমএ/এএসআর