ঢাকা: সাড়ে ১৬ লাখ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার তত্ত্বীয় পরীক্ষার আগে এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে একযোগে এসএসসি, দাখিল পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৮ লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ জন ছাত্র এবং ৮ লাখ ৮ হাজার ৫৯০ জন ছাত্রী।
রাজধানীতে যেন পরীক্ষার্থীদের যানজটের সমস্যা না হয় সেজন্য সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের স্থান পরিবর্তন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকটি সচিবালয়ের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দিন এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবীদ এবং এসএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ (১৯২১) (সৃজনশীল) ও বাংলা-২ (৮১২১) (সৃজনশীল) ও দাখিল ভোকেশনালে বাংলা-২ (১৭২১) (সৃজনশীল) পরীক্ষা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সকাল ১০টায় রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন।
পরীক্ষা উপলক্ষে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১৩ লাখ ৪ হাজার ২৭৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৫ ও এসএসসি ভোকেশনালে (কারিগরি) ৯৮ হাজার ৩৮৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এক লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ শিক্ষার্থী বেড়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী বেড়েছে ৯২ হাজার ৬৬৩ ও ছাত্র ৭৯ হাজার ৫৯৪ জন। গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩৩৯ ও ছাত্রী ছিল ৭ লাখ ১৫ হাজার ৯২৭ জন।
এবার ৩ হাজার ১৪৩টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ১১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ২৭টি কেন্দ্র বেড়েছে।
এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৭, অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৭৪ ও বিশেষ (১ থেকে ৪ বিষয়ে পরীক্ষা দেবে) পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ জন।
বিদেশের আটটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০৪ জন।
এ বছর প্রথমে বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। উভয় পরীক্ষার মধ্যে ১০ মিনিটের ব্যবধান থাকবে। এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী বছর থেকে এমসিকিউ পরীক্ষায় ১০ নম্বর কমিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
এবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
এবারও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী শ্রুতি লেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবেন।
এবারই প্রথম বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (অটিস্টিক ও ডাউন সিনড্রোম বা সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত) পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে। একইসঙ্গে পরীক্ষার কক্ষে তাদের অভিভাবক বা শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সারাদেশে সাতজন অটিস্টিক পরীক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৮ মার্চ পর্যন্ত এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৯ মার্চ সংগীতের ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং ১০ থেকে ১৪ মার্চের মধ্যে বেসিক ট্রেডসহ এসএসসির সব বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়ার সূচি রয়েছে।
সূচি অনুযায়ী, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে তত্ত্বীয় শেষ হবে ১০ মার্চ। এক্ষেত্রে ১৫-১৯ মার্চের মধ্যে সব ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করার কথা।
এবারও সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকালের পরীক্ষা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নেওয়া হবে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এবারও ফল প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফেসবুকে ভুয়া প্রশ্ন ছড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস