জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ক্লাস শুরু হচ্ছে শনিবার (১২ মার্চ)। আর প্রবেশিকা অনুষ্ঠান হবে ১৬ মার্চ।
এরই মধ্যে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ শুরু করেছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও হলগুলো। তবে প্রতি বছর নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে র্যাগিংয়ের মতো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। বরাবরের মতো এবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির সূত্রে জানা যায়, র্যাগিংয়ের মতো একটি ভয়াবহ মানসিক ও শারীরিক লাঞ্ছনার হাত থেকে নতুন শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে প্রশাসন বিভিন্ন প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। বুধবার (০৯ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাস ভবনে হল প্রাধ্যক্ষ কমিটি ও প্রক্টরিয়াল বডির একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কোনো হলে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটলে হল প্রাধ্যক্ষদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্টরিয়াল বডিকে সোচ্চার ভূমিকা পালনের জন্য বলা হয়।
অন্যদিকে সব বিভাগীয় সভাপতি ও বিভাগের ছাত্রকল্যাণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য একটি সভা করবেন বলে জানা যায়। সে সভায় বিভাগীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ব্যাপারে সোচ্চার করা হবে।
এর আগে ৫ মার্চ ও ৭ মার্চ কয়েক দফা মিটিং করেছে হল প্রাধ্যক্ষ কমিটি। যেখানে প্রধান বিষয় ছিল র্যাগিং। এছাড়া ৯ মার্চ (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। যাতে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য শিক্ষকদের আহ্বান করা করা। অন্যদিকে সাংবাদিক সমিতি ও প্রক্টরিয়াল বডির মতবিনিময় সভায় র্যাগিংয়ের মতো ভয়াবহ সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এদিকে কোন কোন বিষয়গুলো র্যাগিংয়ের অন্তর্ভক্ত ও এর শাস্তি কী এসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে দেয়াল লিখন, পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণ এবং প্রবেশিকা অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের ভাষণে তুলে ধরা হবে বলে জানা যায়।
প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ হাফিজুর রহমান বলেন, র্যাগিং নিয়ে আমরা প্রাধ্যক্ষ কমিটি কয়েক দফা মিটিং করেছি।
ফজিলাতুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শাহেদুর রশিদ বলেন, র্যাগিংয়ের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেমন সোচ্চার; ঠিক তেমনি আমরা হল প্রশাসন র্যাগিংয়ের ব্যাপারে খুবই তৎপর। এবার যেকোনো ধরনের অসুবিধা এড়াতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও জাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, র্যাগিং প্রতিরোধ করার জন্য আমরা প্রত্যেকটি হলে জুনিয়র কর্মীদের পাশাপাশি সিনিয়রদের বলে দিয়েছি যাতে এই কর্মকাণ্ড তারা এড়িয়ে চলেন এবং আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টার করবো।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ক্যাম্পাস যাতে র্যাগিংমুক্ত রাখা যায়- সে জন্য আমরা প্রক্টরিয়াল টিম খুবই সতর্ক অবস্থানে আছি। ইতোমধ্যে সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের সঙ্গে বসেছি। তাদের সুপরামর্শগুলো গ্রহণ করেছি।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন বলেন, এরই মধ্যে হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টরিয়াল বডি ও বিভাগীয় সভাপতিদের র্যাগিংয়ের বিষয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এবারও শৃঙ্খলা বিধি অনুয়ায়ী র্যাগিংয়ের শাস্তি স্বরূপ জরিমানাসহ বহিষ্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৬
আইএ