ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

আর পরীক্ষার হলে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৬
আর পরীক্ষার হলে যাবেন না শিক্ষামন্ত্রী?

ঢাকা: পরীক্ষার্থীদের বিরক্তি এবং সমালোচনার মুখে পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করলেও আর পরীক্ষার হলে যাচ্ছেন না শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের মতো তিনিও পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থাকবেন।

সেখানে কথা বলবেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।
 
আগামী ০৩ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা উপলক্ষে বুধবার (২৩ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি-জেডিসি, এসএসসি এবং এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার প্রথম দিন শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর কেন্দ্র পরিদর্শনকালে পরীক্ষার হলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া রেওয়াজ ছিল।
 
মন্ত্রীর সঙ্গে সে সময়গুলোতে থাকতেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা, দফতরের প্রধান, বোর্ড চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকসহ এক বিশাল দল।
 
আর এ সময় টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের ফটোসাংবাদিকদের সঙ্গে যুক্ত হতেন সংবাদকর্মীরাও। ১০/১৫ মিনিট পরীক্ষার হলে চলতো জটলা। এ নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মুখে বিরক্তির ছাপ দেখা যেতো। আর তা নিয়ে চলে সমালোচনা।
 
পরীক্ষার্থীদের বিরক্তির বিষয়টি নিয়ে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনে গেলেও মন্ত্রী পরীক্ষার হলে ঢুকবেন না বলে সভায় জানিয়েছেন।
 
মন্ত্রী সভায় জানিয়েছেন, তিনি দলবল নিয়ে ভিতরে ঢুকবেন না, কেন্দ্রের বাইরে থাকবেন, সেখানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন। সমালোচনা এবং বিরক্তি এড়াতে মন্ত্রী হলের ভিতরে ঢুকবেন না- এমনটাই জানিয়েছে সভাসূত্র।
 
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন গত ০১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে একটি কক্ষে মন্ত্রীর সঙ্গে শুধু শিক্ষাসচিব থাকলেও ফটো সাংবাদিকরা তাদের ছবি তোলার সময় পরীক্ষার্থীদের বিরক্তির ছাপ দেখা যায়। ওই ছবিগুলোতে দেখা গেছে মন্ত্রী পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।
 
গত বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন ০১ এপ্রিল ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শনকালে কক্ষ পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ। প্রশ্নপত্র কেমন হয়েছে, পরীক্ষা কেমন হচ্ছে- এসব জিজ্ঞাস করেন মন্ত্রী। পরামর্শ দেন নির্ভয়ে পরীক্ষা দিতে।  
 
আর পরীক্ষার হলে শিক্ষামন্ত্রীর এ পরিদর্শন ধারণ করতে প্রায় গোটা বিশেক ভিডিও ক্যামেরা ও আরও কয়েকজন পত্রিকার ক্যামেরাম্যান হুড়োহুড়ি করেন। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আরও ২/৩ জন। ক্যামেরাম্যানদের হুড়োহুড়িতে পরীক্ষার্থীদের চোখে মুখে বিরক্তির ছাপও লক্ষ্য করা যায়।        
 
২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা থেকে কেন্দ্রে গেলেও পরীক্ষার হলে প্রবেশ করছেন না প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী।
 
ওই পরীক্ষার আগে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অনেক সময় অনেক কথা হয়। তবে এবার কোনো কথা না হোক, সে জন্য যত্নবান থাকবো। আমি কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবো না। কয়েক মিনিটের জন্য ভেতরে প্রবেশ করলেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ব্যাহত হতে পারে। প্রয়োজনে কেন্দ্রের বাইরে দিয়ে দেখে আসবো পরীক্ষার পরিবেশ-পরিস্থিতি।
 
এরপর কেন্দ্রে গেলেও পরীক্ষার হলে যাচ্ছেন না প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী।
 
নকলমুক্ত পরীক্ষা গ্রহণে ছাড় নয়
আগামী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়।
 
সভায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না। নকলমুক্ত পরিবেশ গ্রহণে ‘পুলিশ জিরো টলারেন্স’ ভূমিকায় থাকবে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
 
এছাড়া ফেসবুকে যাতে কেউ ভুয়া প্রশ্নপত্র দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে সেজন্য বিটিআরসি’র কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
 
শান্তিপূর্ণভাবে শৃঙ্খলার সঙ্গে নকলমুক্ত পরিবেশে যথাসময়ে পরীক্ষা শেষ করতে সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়। যাতে কেউ মোবাইল ফোন কেন্দ্রে না নিয়ে যান, সে বিষয়টিও আলোচনায় জোরালোভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়।
 
সভাসূত্র জানায়, কোচিং সেন্টারগুলোর ওপর দৃশ্যমান চাপ দেখতে চান মন্ত্রী।
 
সরকারের পদক্ষেপের ওপর আস্থা রেখে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী।
 
শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, পুলিশ, র‌্যাব, বিটিআরসি ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
এমআইএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।