কোচিং সেন্টারের ভুলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া হলো না প্রায় ৬০০ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিলেট ও দিনাজপুরের শিক্ষার্থী বেশি বলে জানা গেছে।
জানা যায়, আবেদন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করা হলেও তাদের ছবি বা সাক্ষর সার্ভারে আপলোড করা হয়নি। এ কারণে তাদের প্রবেশপত্র তৈরি হয়নি। বাতিল হওয়া বেশিরভাগ আবেদন করা হয়েছে সিলেট ও দিনাজপুরের ইউসিসি নামে একটি কোচিং সেন্টার থেকে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এসব কোচিং সেন্টার ভর্তির আবেদন খরচ বাবদ ৪৫০ টাকা করে নেয় বলেও জানান একাধিক শিক্ষার্থী (যদিও জবির সকল খরচ মিলিয়ে মোট ফি ৪০৪ টাকা)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আবেদনগুলোর মধ্যে তিনটি কোচিং সেন্টারের পরিচয়ে পৃথক তিনটি আবেদনে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীর অসম্পূর্ণ আবেদনের কথা জানানো হয়। বিশেষ বিবেচনায় ভুল সংশোধন করে প্রবেশপত্র দিতে অনুরোধ করা হয় এসব আবেদনে। আবেদনকারী তিনটি কোচিং সেন্টারের মাঝে একটি হলো সিলেটের ইউসিসির চৌহাট্টা শাখা এবং আরেকটি হলো ইউসিসির দিনাজপুর শাখা। অপর কোচিং সেন্টারটি হলো সিলেটের ‘সেন্টার ফর ইন্টারমিডিয়েট ফিজিক্স অ্যান্ড কেমেস্ট্রি (সিআইপিসি)’।
এছাড়া নেত্রকোনা ইউসিসির পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ৮৮ জন শিক্ষার্থীর ১৩৪টি আবেদনে প্রবেশপত্র না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
আবেদন বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে জবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওয়াদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে বেশ কিছু অসম্পূর্ণ আবেদন এসেছে। তবে এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ এতে আমাদের কোনো ত্রুটি ছিল না।
এ ব্যাপারে সিলেট ইউসিসি কোচিং সেন্টার থেকে বলা হয়, আমরা কোনো টাকা জমা নেইনি, আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিচে আরেকজন ভদ্রলোক ‘সিআইপিসি’ নামে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। তার কাছে হয়তো শিক্ষার্থীরা আবেদনের টাকা জমা দিয়েছেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান এমন কোনো আবেদনের সাথে যুক্ত নয়।
ভুক্তভোগীদের একজন সিলেটের জয়চন্দ্র শীল বলেন, আমি সিআইপিসি’র সিলেট শাখার আনোয়ার স্যারের কাছে ভর্তির আবেদন বাবদ ৪৫০ টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষাই দিতে পারলাম না। বিষয়টা নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী আন্দোলন করেছে, শুনেছি স্যারকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে আবার ছেড়েও দিয়েছে।
আবেদন বাতিল হওয়া অন্য আরেক শিক্ষার্থী তানভির হোসাইন শাওন বাংলানিউজকে বলেন, আমি পরীক্ষা দিতে জগন্নাথে এসেছিলাম। কিন্তু আমার প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি। আমি সিলেটের সিআইপিসি কোচিং সেন্টারের পরিচালক আনোয়ার স্যারের মাধ্যমে আবেদন করেছিলাম। তার ভুলে আমরা পরীক্ষাই দিতে পারলাম না!
এ বিষয়ে জানতে সিআইপিসি’র পরিচালক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে এদের বাইরে প্রায় সাড়ে তিনশ শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ার কথা জানিয়ে সরাসরি আবেদন করেছেন বলেও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তর।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৬
ডিআর/এমজেএফ