খুলনা: পার্কে, নদীর পাড়েও যখন ওয়াই-ফাই জোন, তখন একটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেই ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধা। এমনকি শিক্ষার্থীদের কোনো হলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সুবিধা নেই।
শুধুমাত্র কম্পিউটার সেন্টারসহ কয়েকটি স্পটে ওয়াই-ফাই সুবিধা থাকলেও সেগুলো অনেক ধীরগতির। যা একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বেমানান। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য নেই ক্যাম্পাসজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি। এমনকি মেইনগেট বা পকেটগেটের প্রবেশমুখেও নেই নজরদারির জন্য কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা।
এই হচ্ছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অবস্থা। সবখানে যখন ডিজিটালের জয় জয়কার, তখন ননডিজিটাল কুয়েটের এ অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তারা বলছেন, ক্যাম্পাসে ওয়াই-ফাই জোন না থাকায় তাদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করতে সমস্যা হয়। এছাড়া সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় বার বার ক্যাম্পাস ও হলে ঢুকে বহিরাগতরা হামলা ও অস্ত্রের মহড়া দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে।
রোববার (০২ অক্টোবর) রাতে এম এ রশিদ হল ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক হলে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তার ও আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে বহিরাগতদের হামলা, গুলিবর্ষণ, ককটেল বিস্ফোরণ, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, গার্ড, ডাইনিং বয়সহ ১০ জন আহত হন।
এর প্রতিবাদে সোমবার (০৩ অক্টোবর) সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের মাধ্যমে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা, ডিজিটাল ক্যাম্পাসসহ ছয় দফা দাবি জানান।
দাবিগুলো হচ্ছে- বহিরাগতদের ইন্ধনদাতা, প্রবেশের সুযোগদাতা, আশ্রয়দাতা এবং বহিরাগতদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বিঘ্নের অপরাধে পুলিশে সোপর্দ করা, আনসার ক্যাম্প স্থাপন, প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা, সীমানা প্রচীরের উপর দুই থেকে তিন ফুট কাটাতারের বেড়া নির্মাণ ও লাইটের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ, বহিরাগদের দ্বারা ঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য মামলা এবং প্রতি মাসে হলের ম্যানেজার ও হল প্রশাসনকে মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ।
শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি আকারে এসব দাবি পরিচালকের (ছাত্রকল্যাণ) মাধ্যমে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের বরাবর দেন।
এক বিজ্ঞপ্তিতে কুয়েটের গণসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন, ক্যাম্পাসের মূল ফটকে পুলিশ মোতায়েন এবং সার্বক্ষণিক স্বশস্ত্র আনসার মোতায়েনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের চারধারের সীমানা প্রচীরের উপর তারকাটার বেড়া এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০১৬
এমআরএম/এসএনএস