ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণিতে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে গত ৩০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার)। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো ফল প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত কয়েক বছর ধরে ভর্তি পরীক্ষার দুই থেকে চারদিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়। সে হিসেবে এবছর ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশে ‘রেকর্ড’ সময় নিচ্ছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
এ বছর কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার দুই দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হয়।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত চার বছর পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত শিক্ষাবর্ষে (২০১৫-১৬) ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৬ অক্টোবর। ফলাফল প্রকাশ করা হয় ১৮ অক্টোবর।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৫ সেপ্টেম্বর ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। ফলাফল প্রকাশ করা হয় ৯ সেপ্টেম্বর।
২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৫ নভেম্বর। ফলাফল প্রকাশ করা হয় ১৮ নভেম্বর।
আর ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে ফলাফল প্রকাশিত হয় ২৭ নভেম্বর।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১ দিন পর, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৩ দিন পর, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ২ দিন পর, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ৩ দিন পর ফলাফল প্রকাশিত হয়।
অথচ চলতি শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও ফলাফল প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে ব্যাপক ভুলের অভিযোগ করেন ভর্তিচ্ছুরা। প্রশ্নপত্রের অ্যাকাউন্টিং অংশের ১৮ নম্বর প্রশ্নের সঠিক উত্তর বাছাইয়ে মোট পাঁচটি অপশন দেওয়া হয়। প্রশ্নটির সঠিক উত্তর হবে ‘ডি’ অপশন। প্রশ্নপত্রে এ অপশনটি বাংলায় লেখা হয় ৫:৯:৫। যা ইংরেজিতে লেখা হয় ৬:৯:৫। অনেকে দ্বিধায় পড়ে উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকেন এ প্রশ্নের।
প্রশ্নপত্রের মার্কেটিং অংশেও অসংখ্য বানান ভুল পাওয়া গেছে। এ অংশের বাংলা মাধ্যমের প্রশ্নের বানানে ৯টি বানান ভুল করা হয়েছে। একটি সেটের ফিন্যান্স অংশে ৬ নম্বর প্রশ্নের পরে ৭ নম্বর প্রশ্ন না দিয়ে ৮ নম্বর প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এই সেটে একটি প্রশ্ন কম ছিল। এদিকে প্রশ্নপত্রে ভুলের কারণে ভালো পরীক্ষা দিতে পারেন নি বলে জানিয়েছে একাধিক ভর্তিচ্ছু। ইংরেজি অংশে সংখ্যা ব্যবহারের ভুল করা হয়েছে।
এর আগে ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষের ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও ভুল ছিল। পরে পরীক্ষাটি কর্তৃপক্ষ ফের নিতে বাধ্য হয়।
একদিকে ভুলে ভরা প্রশ্ন, অন্যদিকে ফল প্রকাশে বিলম্ব। সবমিলিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাতে হচ্ছে স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ভর্তিচ্ছুক ও তাদের অভিভাবকদের।
নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিভিন্ন ভুল থাকার কারণে বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে। এতে স্বল্প সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এখন আবার ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না। সবমিলিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছি। ’
ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রেজাল্ট তৈরি হয়ে গেছে। আমরা প্রশাসনিক ভবনে জমা দিয়েছি। ওখানে ভালো করে চেক করে প্রকাশ করা হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬ , ২০১৬
এসকেবি/জেডএস