ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শেকৃবিতে ৩ বছর ধরে ‘নেই’ শিক্ষক সমিতি ও নীল দল

শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
শেকৃবিতে ৩ বছর ধরে ‘নেই’ শিক্ষক সমিতি ও নীল দল ছবি: সংগৃহীত

কার্যক্রম নেই রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী-বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের। দু’টি সংগঠনেরই মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় তিন বছর। তবু কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। অথচ শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের গঠনতন্ত্রে প্রতিবছরেই নির্বাচন হওয়ার বিধান রয়েছে।

ঢাকা: কার্যক্রম নেই রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী-বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের। দু’টি সংগঠনেরই মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় তিন বছর।

তবু কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। অথচ শিক্ষক সমিতি ও নীল দলের গঠনতন্ত্রে প্রতিবছরেই নির্বাচন হওয়ার বিধান রয়েছে। সংগঠন দু’টির নেতৃত্ব মনোনয়নে নির্বাচন না হওয়ার পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষক সমিতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৩ সালের আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এ সংগঠনটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন পশু পালন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক বেগ। আর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলী।

২০১৪ সালে সমিতির ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের ড. রহুল আমিনকে নির্বাচন কমিশনার, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইছাক আলীকে সদস্য সচিব এবং অধ্যাপক ড. এ টি এম শামসুদ্দোহাকে সদস্য করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে সেই কমিশনই নির্বাচন স্থগিত করে  দেয়।  

গত বছর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শেকৃবির শিক্ষকরাও কর্মবিরতিতে যান। কিন্তু আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শিক্ষকদের কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় সে বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর একটি আপদকালীন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদকে আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলীকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটি গঠন করা হয়।

চলতি বছরের ১৪ আগস্ট অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদকে উপাচার্য পদে এবং অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলীকে উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়ার ফলে শিক্ষক সমিতি নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। ফলে কার্যত অস্তিত্বহীনই হয়ে পড়েছে শিক্ষকদের  এ সংগঠনটি।

এদিকে, শিক্ষক সমিতির মতো স্থবির আওয়ামী-বামপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলেরও। প্রায় সমান সময় ধরে অর্থাৎ গত ৩ বছর ধরে নেতৃত্ব নির্বাচন হয় না এ সংগঠনেরও। যদিও বিপরীতপক্ষের সংগঠন বিএনপি-জামায়াতপন্থি সাদা দল বেশ তৎপর।

নীল দলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালে নীল দলের কমিটি হয়। সেখানে সভাপতি হিসেবে উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক  ড. ইসমাইল হোসেন নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে আরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষক সমিতি বা নীল দলের নির্বাচনের ব্যাপারে আমার কিছুই করার নেই। কোনো উদ্যোগ নেওয়ার ইখতিয়ারও নেই। শিক্ষকরা যখন চাইবে, তখনই হবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান প্রশাসনও আগের প্রশাসনের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। সমিতিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় শিক্ষকরা নৈতিক পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  শিক্ষকদের পদোন্নতি, বাসা বণ্টন এবং শিক্ষকদের মধ্যে যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রেও বর্তমান প্রশাসন স্বজন ও এলাকাপ্রীতি করছে।

শিক্ষক সমিতির নির্বাচন না হওয়া প্রসঙ্গে সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক এবং কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল বাশার বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষকদের প্রাণের দাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন। আমরা নির্বাচিত হতে না পারলেও নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক সমিতি চাই।  

তিনি বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় বৈধ দাবি-দাওয়া, বাসা বণ্টন, বার্ষিক বনভোজন, শিক্ষক সন্ধ্যা এবং শিক্ষক ক্লাবের খেলাধুলার আয়োজন ইত্যাদি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৬
আরআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।