ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকটে কুমিল্লা সরকারি কলেজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকটে কুমিল্লা সরকারি কলেজ

কুমিল্লা নগরীর প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কুমিল্লা সরকারি কলেজ অন্যতম। একাডেমিক ভবনের স্বল্পতা, শিক্ষক সংকট, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ ও জলাবদ্ধতাসহ এ কলেজে রয়েছে নানা সমস্যা।  

কুমিল্লা: কুমিল্লা নগরীর প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কুমিল্লা সরকারি কলেজ অন্যতম। একাডেমিক ভবনের স্বল্পতা, শিক্ষক সংকট, জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ ও জলাবদ্ধতাসহ এ কলেজে রয়েছে নানা সমস্যা।

 

কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় ১৯৬৮ সালে কুমিল্লা সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। চলতি বছর পর্যন্ত এখানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। কলেজটিতে এ পর্যন্ত  ২৮ জন অধ্যক্ষ দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রফেসর নাজনীন রহমান।
 
কলেজে মোট ২টি একাডেমিক ভবন রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় আরো ২টি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা জরুরি। চাহিদা থাকা সত্বেও অনার্সের অন্য বিষয়গুলো চালু করা যাচ্ছে না শুধুমাত্র ভবনের অভাবে।  

বর্তমানে যে ভবনটিতে অর্নাস শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে তার অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। বর্ষাকালে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। শিক্ষক পরিষদের যে ভবনটি রয়েছে সেটিও দীর্ঘদিনের পুরোনো। যেকোন ম‍ুহূর্তে ছাদ ধসে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এছাড়া রয়েছে ২টি টিনশেড ভবন, যেখানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস করানো হয়।  

গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম আর বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এত বড় প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন হোস্টেল নেই। নেই কোন অডিটোরিয়াম। কলেজটির পুকুর পাড়ে একটি পাঠাগার রয়েছে, সেটিও পরিত্যক্ত।  

কলেজছাত্র ও কুমিল্লা কলেজ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজন বলেন, কলেজের পুরাতন ভবনগুলোর করুন অবস্থা, ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে, একটু বৃষ্টি হলেই শ্রেণিকক্ষগুলোর ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। স্টোর রুম নেই, ফলে কলেজ থিয়েটারের কক্ষে পরিত্যক্ত আসবাবপত্র রাখা হয়। এতে থিয়েটারের কাজকর্মে সমস্যা হয়।  

এছাড়াও রয়েছে শিক্ষক সংকট। কলেজে শিক্ষক রয়েছেন ৩৫ জন। প্রতিটি অর্নাস বিভাগে এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ৩ জন প্রভাষক, ২ জন সহকারী অধ্যাপক এবং ১ জন সহযোগী অধ্যাপক থাকার কথা থাকলেও প্রতিটি বিভাগে মাত্র ৩ জন শিক্ষক দিয়ে অনার্স বিভাগসমূহ পরিচালনা করা হচ্ছে।  

অন্যান্য বিভাগসমূহেও শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে নতুন পদ সৃষ্টি এবং অর্নাস বিভাগ খোলার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কলেজটিতে ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে। নতুন ৪টি বিষয়ে অনার্স চালুর জন্য বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এত সমস্যার মধ্যেও সুখবর হল, কুমিল্লা কলেজ থিয়েটার চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে অন্যতম একটি সংগঠনে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা কলেজ থিয়েটারের জুতি সূত্রধর রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং আধুনিক গানে চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।  

কুমিল্লা জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অধরা খান ঐশি প্রথম স্থান অর্জন করে এবং টাউন হলে অনুষ্ঠিত উপস্থিত বক্তব্যে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রেদোয়ান হোসেন তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে কলেজ থিয়েটার, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি গ্রুপ চালু আছে। কলেজ থিয়েটারের সভাপতি আনোয়ারুল হক এবং কলেজের শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় এ কার্যক্রমগুলো চালু রয়েছে।  

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর নাজনীন রহমান বলেন, এ কলেজ থেকে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এতে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।  

তিনি আরো বলেন, নতুন ভবনের আবেদন জানিয়ে ২ মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কারের কাজ চলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মাঠে নতুন মাটি ফেলা হবে।  

এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি কলেজের কমিটিকে জানানো হয়েছে, যেসব কলেজে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে সেসব কলেজে মন্ত্রণালয় থেকে একযোগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।