ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

দেশকে ভালোবাসতে হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে হবে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
দেশকে ভালোবাসতে হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে হবে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, দেশকে ভালোবাসতে হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে হবে। তোমরা লেখাপড়া করলে দেশ পাল্টে যাবে। পৃথিবীর কোনো দেশ বাংলাদেশকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।

পিরোজপুর: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, দেশকে ভালোবাসতে হলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়তে হবে। তোমরা লেখাপড়া করলে দেশ পাল্টে যাবে।

পৃথিবীর কোনো দেশ বাংলাদেশকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে পিরোজপুর টাউন ক্লাব মাঠের স্বাধীনতা মঞ্চে এক শিক্ষার্থী সমাবেশ ও শহীদ ফয়জুর রহমান স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, একসময় শিক্ষার্থীরা আমার কাছে জানতে চাইত রাজাকারদের গাড়িতে পতাকা কেন? তাদের প্রশ্নের জবাবে আমি কিছুই বলতাম না। এখন রাজাকারদের বিচার হয়েছে, সাজা হয়েছে। সাজা কার্যকরও হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক সেনাদের হাতে শহীদ বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদের কবর জিয়ারত করতে এসে জাফর ইকবাল বলেন, শুধু আমার বাবাকে স্মরণ নয়, মুক্তিযুদ্ধে পিরোজপুরে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রত্যককেই স্মরণ করতে হবে। পিরোজপুরকে আমার নিজের জায়গা মনে করি। এখানে আমার বাবা শহীদ ফয়জুর আহমেদ শুয়ে আছেন।

পিরোজপুরের সড়কগুলো শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নামকরণ করায় আমি অভিভূত। কিছুদিন আগেও বলা হত বাংলাদেশ দিয়ে কিছু হবে না। এমন সময় আসবে যখন বাংলাদেশ ইউরোপ এর মত উন্নত দেশ হবে। এখন আমরা বিদেশে যাই চিকিৎসার জন্য, একসময় বিদেশিরা আসবে এদেশে চিকিৎসা নিতে।  

পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-জাফর ইকবালের সহধর্মিণী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অ্যাডভোকেট এম এ মান্নান, জাফর ইকবালের বোন সুফিয়া হায়দার, ভাই কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব শাহীন, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার এম এ রব্বানী ফিরোজ।

আলোচনা শেষে তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এর আগে সকালে বাবার কবর জিয়ারত ও শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত পিরোজপুরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসেন জাফর ইকবাল। তার বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ স্বাধীনতা পূর্ব তৎকালীন পিরোজপুর মহাকুমা পুলিশ প্রধান ছিলেন।

১৯৭১ সালের ৪ মে ফয়জুর রহমানকে পাকহানাদার বাহিনী পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর তীরে গুলি করে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে মরদেহ উদ্ধার করে সমাহিত করা হয় পিরোজপুর পৌর কবরস্থানে। সেসময় ড. জাফর ইকবাল ও তার পরিবারের সদস্যরা পিরোজপুরে বসবাস করতেন।

শুক্রবার সকালে ড. জাফর ইকবাল, তার ছোট ভাই আহসান হাবিব, বড় বোন সুফিয়া হায়দার, তাদের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা ঢাকা থেকে লঞ্চে করে পিরোজপুরে আসেন। প্রথমে তিনি সবাইকে নিয়ে বাবার কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন। এরপর বলেশ্বর ঘাটের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে শৈশবকে স্মরণ করে খেয়া নৌকায় বলেশ্বর নদে নৌ ভ্রমণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।