ঢাকা: পরীক্ষা না দিয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন একজন শিক্ষার্থী! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইআর) এ ঘটনার জন্ম হয়েছে।
ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ঘটনাকে বড় অনিয়ম অভিহিত করে তদন্ত সাপেক্ষে এর রহস্য উদঘাটনসহ দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে বলে ফল প্রকাশ হয়েছে। এটা সুখবর যে তার পক্ষ থেকেই অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। শিক্ষার্থী সৎ বলেই বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে অবশ্যই এর রহস্য বের করা হবে। কারণ এতো বড় ঘটনাতো হতে পারেনা!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীন এমএড (ইভিনিং) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত শুক্রবার। এখানে ভর্তির জন্য অন্যান্যদের মতো আবেদন করেছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক পল্লবী বাড়ৈ। যার রোল নম্বর ২৫৫৩। তবে আবেদন করলেও অসুস্থতার জন্য বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এ সদস্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।
অথচ মঙ্গলবার ফল প্রকাশ করার পর দেখা গেল মেধা তালিকায় পল্লবী বাড়ৈর নাম। আইইআর এর নোটিশ বোর্ডে ফলাফল টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে পল্লবী বাড়ৈর মেরিট স্কোর ৭৬ এবং মেরিট পজিশন ৪১। বিষয়টি প্রথম নজরে এসেছে পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রার্থীর কয়েক পরিচিত ব্যক্তির। তারাই তাকে ফোন করে জানান যে, মেধা তালিকায় নাম উঠে এসেছে।
পল্লবী বাড়ৈ বলেছেন, আমি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। তবে ফল প্রকাশের পর আমার পরিচিত কয়েকজন জানায় মনোনীত হওয়ার বিষয়টি। আমার বিশ্বাস না হলেও কে বা কারা জালিয়াতি করেছে বলে চিন্তাও লাগছিল। আমি দ্রুত বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানাই।
এরপর আমার দাদা বুধবার রাতে টেলিফোনে ও বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে উপাচার্য স্যারের নজরে আনেন। পল্লবী বাড়ৈ বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছি। আমি চাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেন দুর্নাম না হয়। এটা কোনো ভুলও হতে পারে। আবার কেউ কোনো জালিয়াতিরও আশ্রয় নিতে পারে। তাই দেখা দরকার আসলে কি ঘটেছে।
এদিকে ওইদিন একই কক্ষে পরীক্ষায় অংশ নেয়া কয়েকজন জানিয়েছেন, পল্লবী বাড়ৈ অনুপস্থিত থাকলেও তার আসনে বসে একজন পরীক্ষা দিয়েছেন। ওই আসনে তৃতীয় কেউ পরীক্ষা দিচ্ছে বলে কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকদের নজরেও আনেন কোনো কোনো প্রার্থী। কিন্তু দায়িত্বরত শিক্ষক তখন অভিয়োগ রহস্যজনক কারণে আমলে নেননি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমি জানতে পেরেছি এখানে লেখার ভুল হয়েছে। আমি কথা বলেছি। তারা বলছে রোল নম্বর লেখা ভুল হয়েছে। তাহলে ওইদিন একই আসনে তৃতীয় ব্যক্তির পরীক্ষা ও রোল নম্বর ছাড়া নামও মিলে যাওয়ার রহস্য থেকেই যায়।
উপাচার্য বলেন, হ্যাঁ বিষয়গুলো অবশ্যই ভাল করে খতিয়ে দেখতে হবে। এটা কিভাবে হলো!
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
এমএন/এসএইচ