ইবি: মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এ পরীক্ষায় ‘বি’সেটের প্রশ্নপত্রে ছাপার ভুলের কারণে ১৯টি প্রশ্ন কম আসে।
তবে ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারীর তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ফটোকপি করে বাকি প্রশ্ন সরবরাহ করে পরীক্ষা শুরু করেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, এবছর কঠোর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও পর পর দুই দিন প্রশ্নপত্রে ভুলের বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলে মনে করছেন অনেক শিক্ষক। মঙ্গলবারের ঘটনা তদন্ত করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত সোমবার ‘এইচ’ইউনিটের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ২০টিরও বেশি প্রশ্নে ভুল ও অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকাল ৪টা থেকে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত ‘ডি’ইউনিটের ২য় শিফটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ‘এ’ও ‘বি’দুই সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়।
এসময় ভর্তিচ্ছুরা প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে ‘বি’সেটের প্রশ্নে রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ে ১৯টি প্রশ্ন কম দেখে হল পরিদর্শকদের অবগত করেন।
পরীক্ষার হল সূত্রে জানা গেছে প্রশ্নপত্রের ৪নং পৃষ্ঠায় আবারও ৩নং পৃষ্ঠার প্রশ্নগুলো ছাপা হয়। এতে ৪নং পৃষ্ঠার রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ের ১৯টি প্রশ্ন বাদ পড়ে যায়।
পরে হল পরিদর্শকরা বিষয়টি ইউনিট সমন্বয়কারীকে জানালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান ও ইউনিটের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। পরে প্রশ্নপত্রে যে প্রশ্নগুলো কম ছিলো তা ফটোকপি করে সরবরাহ করা হয়।
অন্যদিকে, ইউনিট কর্তৃপক্ষের এই ভুলের ফলে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে সংশোধিত প্রশ্নপত্র সরবরাহ করতে ২০ মিনিট সময় লাগে। পরে পরীক্ষার্থীদের এই ২০ মিনিট সময় বাড়িয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও কয়েকটি কক্ষে এর ব্যতিক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভর্তিচ্ছুরা।
ফলিত বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ‘বি’সেটে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশ্ন কম আসায় স্যাররা আমাদের অতিরিক্ত সময় দেওয়ার কথা বলে পরে পূরণ করতে বলেন। কিন্তু পরে ২০ মিনিট সময় বেশি দেওয়ার কথা থাকলেও তার চেয়ে কম সময় দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ‘ডি’ইউনিটের সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. শামসুল ইসলাম বলেন, আমরা বুঝতে পারছি না কীভাবে এতোবড় ভুল হয়ে গেলো। আমাদের অজান্তেই কম্পিউটারে একটি কপি ছিলো। পরে ওই কপি থেকে প্রিন্ট করে পরীক্ষার্থীদের সংশোধিত প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজি আক্তার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। তাদেরকে আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাদপড়া অংশ প্রিন্ট করে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করার নির্দেশ দেই। পরবর্তীতে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি তদন্ত করতে একটি কমিটি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৬
এসএনএস