ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৭
জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা! জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ এর ২৫ বিঘা জমিতে এখনো চলছে ইটভাটার ব্যাবসা।

জমি ক্রয়ের ৩ বছর পার হলেও এখনো ইটভাটা না সরানো ও প্রস্তাবিত হলের কাজ শুরু না হওয়ায় চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।  


জানা যায়, বিভিন্ন সময় হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বুড়িগঙ্গার ওপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাঘৈর গ্রামে ২৫ বিঘা জমি ক্রয় করে জবি প্রশাসন।

জবি উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান তখন ঘোষণা দেন ক্রয়কৃত এ জমিতেই হবে জবিয়ানদের স্বপ্নের প্রথম হল, যার নামকরণ হবে জাতির জনক ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’। এজন্য এই জায়গায় থাকা ইটভাটা শিগগিরই উঠিয়ে দেওয়া হবে এবং এই জায়গা মাটিভরাট করে হল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এছাড়া হল নির্মাণ শেষে এখানে প্রথম সমাবর্তন আয়োজন করা হবে বলেও একাধিকবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন উপাচার্য।  
জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা

সরেজমিনে দেখা যায়, সদ্য চালু হওয়া কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের বিপরীত পাশে একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘নির্ধারিত স্থান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’। কিন্তু সাইনবোর্ডের দেখানো তীর চিহ্ন মোতাবেক তাকিয়ে দেখা গেল জমিটিতে রয়েছে একটি ইটভাটা!

জমি ক্রয়ের ৩ বছর পার হলেও এখনো সেখানে চলছে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। কাঁচা মাটির স্তুপ/টিলা থেকে শুরু করে ইট তৈরি, শুঁকানো, এবং পোড়ানোর সব কাজই হচ্ছে জবির মালিকানাধীন জমিতে। এমনকি যেসব শ্রমিকরা এই ইটভাটায় কাজ করেন তাদের থাকার জন্য এই জমিতেই তৈরি করা হয়েছে ইটের তৈরি অস্থায়ী ছোট ছোট ঘর।

ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জবির মালিকানাধীন এই জমিটি ইটভাটা কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করছে সম্পূর্ণ বিনা টাকা-পয়সায়। কিন্তু একই জমির আগের মালিককে বছরে একটি নির্দিষ্ট হারে অর্থ প্রদান করে ইজারা নিয়ে জমি ব্যাবহার করতো 'এনবিএম ব্রিকস' কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। মালিকানা পরিবর্তনের তিনবছর অতিবাহিত হলেও তারা বিনা টাকায় জবির ২৫ বিঘা জমি ব্যবহার করছে।

জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা
এ প্রসঙ্গে জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যে হলের জন্য আমরা বার বার লড়াই করেছি, ক্ষেত্র বিশেষে রক্ত দিয়েছি সেই হলের জায়গায় এখনো ইটভাটা তা মানা যায়না। প্রশাসন জবির সকল উন্নয়ন কাজেই ডিলেমির পরিচয় দিয়েছে, প্রশাসনের ব্যার্থতার কারণেই এখন পর্যন্ত জবির কোনো হল নেই বলেও দাবি করেন তিনি।


জবি ক্রয়কৃত জমিতে ইটভাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিএম ইটভাটার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আমাদের ১৫ বছরের দীর্ঘ সময়ের ব্যাবসা। আগের মতোই জবির এই জমিসহ আশপাশের জায়গা ব্যবহার করছি। তবে আমার জানা মতে অন্য জায়গা ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। কিন্তু তাদের (জবি) জায়গা ব্যবহারের জন্য কোন ভাড়া দেয়া হয় কি না তা আমার জানা নেই।
জবির প্রস্তাবিত হলের জায়গায় ইটভাটা

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে বলেন, জবির বঙ্গবন্ধু হলের জায়গায় ইটভাটা রয়েছে তা সত্য। তবে বেশ কিছুদিন আগেই ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাদের সময় দেওয়া হয়েছিল ইটভাটা সরানোর। শিগগিরই খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।


কিন্তু এই তারিখের বিষয়টি জানেন না বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন 'এনবিএম' ইটভাটার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন।


এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৭
ডিআর/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।