কিন্তু ভবন পরিবর্তন বা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে। পুরনো কলাভবনে তাই ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে।
পুরান কলা ভবনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে ক্লাস ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। যে কোনো সময় বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়তে পারে। সব সময় আতঙ্কে থাকি। ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর ছাদের বড় একটি অংশ খসে পড়ে। এতে একজন শিক্ষার্থী আহত হন।
পুরান কলা ভবনে অবস্থিত ডিন অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, অনেকগুলো বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া হতো এ ভবনে। তার মধ্যে সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগকে নতুন কলা ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর আগে ইতিহাস বিভাগকে নতুন কলা ভবনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এখানে। ভবনের এ অবস্থা নিয়ে সবাই আতঙ্কে থাকে। বর্তমানে ফাটলের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে আমরা একাধিকবার প্রকৌশলী অফিসে চিঠি পাঠালেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অতি দ্রুত এ ভবন সিলগালা বা সংস্কার না করা হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকার কারণে বিল্ডিংয়ের সংযোগস্থলে বড় একটি ফাটল। একটি ওয়াল থেকে আরেকটি ওয়াল বেঁকে গেছে। বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে, কোনো কোনো অংশ ভেঙ্গে গেছে। প্লাস্টার খসে পড়েছে। বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে শেওলা জমে গেছে।
চারুকলা বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জয় বলেন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগের ব্যবহারিক কাজ বেশি থাকায় অধিকাংশ সময় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওই ভবনে অবস্থান করতে হয়। শিক্ষার্থীদের মনে যদি ছাদ খসে পড়ার ভয় থাকে তাহলে তারা কিভাবে কাজে মনযোগী হবে।
নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রাজা বলেন, সব সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। কখন জানি বিল্ডিংয়ের কোন অংশ খসে মাথায় পড়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ
মোকাবেলায় এ বিল্ডিং সহনশীল নয়। ছোট আকারের কোন ভূমিকম্প হলেই এ বিল্ডিং ধসে পড়তে পারে।
কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা এ ভবন নিয়ে শঙ্কিত। সংষ্কার করা না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে বার বার তাগাদা দেওয়া হলেও সংস্কার কাজ শুরু করা হচ্ছে না।
দ্রুত বিল্ডিংয় সংস্কার করার দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আফসার আহমদ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস সালাম মো. শরীফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুমোদন না দিলে তো আমরা কাজ শুরু করতে পারি না। আমরা ফাইল প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের কোন নির্দেশনা বা টাকা দেওয়া হয়নি। প্রশাসন অনুমোদন দিলেই আমরা কাজ শুরু করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১. ২০১৭
জেডএম/