বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের সব থেকে দীর্ঘমেয়াদী এ আন্দোলনের ৩৫তম দিনে সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ববির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন ও শফিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যকে ৪৬ দিনের ছুটিতে পাঠানোর খবর পাওয়ার পরপরই গোটা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন।
তারা জানান, এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সভা করেন। যেখানে দ্রুত সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন এবং ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দেওয়া হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে চলমান সব ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি ৩৫তম দিনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে টানা এতোদিনের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের রেকর্ড এবারই গড়া হয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির পাশাপাশি শিক্ষকদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে ববির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এটাই প্রথম এতো বড় আন্দোলন। যে আন্দোলনের সময়কাল যেমন দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় ধরে চলমান ছিল, তেমনি আন্দোলনে কোনো সহিংসতার ঘটনাও ঘটেনি। তাই শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ ৩৫ দিনের অহিংস এ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ দেওয়া হয়।
অপরদিকে বিগত দিনে উঠে আসা বিভিন্ন দাবির কথা নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত আকারে পেশ করবেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে একমত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের অনিয়ম-অপশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুশাসন সৃষ্টির লক্ষে ছাত্রসমাজ এক হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেয় সভায়। এছাড়া উপাচার্যের পদে ভবিষ্যতে যিনি আসবেন, তাকে তাদের এসব দাবিগুলোর কথা যেমন জানানো হবে, তেমনি বর্তমান ভিসির ঘনিষ্টজন এবং যারা বিভিন্ন দুর্নীতি সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
তবে সভার শুরুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি পাশে থাকার জন্য বরিশালবাসীকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবু জাফর মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলনের সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে অতিদ্রুত ক্লাসে ফিরে যাবেন।
২৬ মার্চ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় প্রতিবাদ করে ববির শিক্ষার্থীরা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে উল্লেখ করেন। এরই প্রতিবাদে ২৬ মার্চ থেকেই ভিসির পদত্যাগ ও পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের ছুটির দাবিতে জোরদার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৯
এমএস/এএটি