ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা। ছবি: বাংলানিউজ

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালনের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।

ড. মাহবুবর রহমানের করা মামলাটি হয়রানিমূলক আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।  

এসময় মামলাকারী ড. মাহবুবর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতির দাবিতে প্রধান ফটকে তালা দেন তারা।

জানা যায়, বেলা পৌনে ২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা তৌকির মাহফুজ মাসুদ, জোবায়ের, শাহজালাল ইসলাম সোহাগ কামরুল হাসান অনিকের নেতৃত্বে দলীয় টেন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি প্রশাসন ভবনের সামনে এসে এক সমাবেশে মিলিত হয়৷

সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, একজন শিক্ষক কিভাবে তার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে? ড. মাহবুবর রহমান বিভিন্ন সময় চাকরি বাণিজ্যের অভিযোগে অভিযুক্ত। নিয়োগ বাণিজ্যে তার নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তার প্রকাশ্য মদদেই ২০১৪ সালে ছাত্রলীগের ওপর গুলি চালায় পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রী যেখানে ঘরের লোকদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিচ্ছেন সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যের মত গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে আছেন তিনি।  আমরা শিগগিরই ড. মাহবুবর রহমানকে সব রকম প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।

পরে বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহগামী শিক্ষার্থী বহনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আটকা পড়ে।

পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে সব রকম প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির দাবি জানান। উপাচার্য এ বিষয়ে পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তারা প্রধান ফটক খুলে দেন।

জানা যায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি টেলিভিশন চ্যানেলে লাইভ সাক্ষাৎকার দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান লালন। লাইভ সাক্ষাৎকারে লালন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্র জীবনে ছাত্রশিবিরের নেতৃত্ব দিতেন উল্লেখ করেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের মূলহোতা, শিক্ষার্থীদের হুমকি, ছাত্রলীগের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশদাতাসহ নানা অভিযোগ তোলেন।

অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে গত ১৭ অক্টোবর  মিজানুর রহমান লালন এবং ডিবিসির সম্পাদক মুনজুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইবি আমলী আদালতে একশ’ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন ড. মাহবুবর রহমান।

এর আগে ড. মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করে লালনের বিচার দাবি করেন। লালনের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই বাচাইয়ের জন্য শিক্ষক সমিতি তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছে বলে জানা গেছে।

অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে তা প্রমাণ করতে পারলে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাব। আমি প্রশাসন ও শিক্ষক সংগঠনের কাছে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করে সাড়া না পেয়ে আইনি আশ্রয় নিয়েছি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে যে মামলার ঘটনা ঘটেছে তা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বসার ব্যবস্থা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।