রোববার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফওজিয়া আক্তার।
জাকির হোসেন বলেন, সুষ্ঠুভাবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে মনিটরিং রুম, কন্ট্রোল রুম রয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রশ্নফাঁসের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে- সাংবাদিকরা এ তথ্য জানালে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেও কঠোর তদারকির মধ্যে রাখা হয়েছে।
এবারের পরীক্ষায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি- এ কারণ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন বাড়িতে এক ছেলের সঙ্গে তিন মেয়ে থাকে, এজন্যই ছাত্রীর সংখ্যা বেশি।
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এখনও সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি উন্নীত করতে পারিনি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক। তার নিদের্শনায় এ বিষয়ে কাজ চলছে। ফাইল চালাচালি চলছে। তবে আমি করি, এ পরীক্ষা খারাপ না। এতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি কেটে যায়। ছোটবেলা থেকেই সাহস সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে কোনো পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি-না জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, কোনো পরীক্ষা কেন্দ্রই বুলবুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। গতবার যেসব পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, এবারও সেখানেই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে তিনি বলেন, শনিবার (১৬ নভেম্বর) চারটি লিংকের মাধ্যমে ভুয়া প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরে, আমরা মিরপুর থানায় জিডি করেছি এবং পুলিশকে লিংক দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র যাতে ফাঁস না হয়, সে বিষয়ে আমরা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে।
রোববার সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি মিলে মোট সাত হাজার ৪৭০টি কেন্দ্রের পরীক্ষায় এবার পরীক্ষার্থী ২৯ লাখ ৩ হাজার ৬৩৮ জন। প্রাথমিক পর্যায়ের এ শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শেষ হবে ২৪ নভেম্বর।
এ বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৭ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১১ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ জন ও ছাত্রী ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৭ জন।
ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা এক লাখ ৮৭ হাজার ৮২ জন ও ছাত্রী এক লাখ ৬৩ হাজার ২৮৯ জন। দেশের বাইরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬১৫ জন।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়িতে গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে দুই লাখ ২৩ হাজার ৬১৫ জন।
সমাপনীতে ছয়টি বিষয়ের প্রতিটিতে ১০০ করে মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় তিন হাজার ৩৪৭ জন ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২৩৬ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৯
ডিএন/আরবি/