১৯৭৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮৫ সাল থেকে। এসময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি কুষ্টিয়া থেকে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে স্থানান্তর হয়।
১৯৯২ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়ার পিটিআই এবং প্যারামেডিক্যাল ভবনে অস্থায়ী কার্যক্রম চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের। ১৯৯২ সালের ১ নভেম্বর শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরের সবুজ চত্বরে মাটির সড়ক আর সবুজ গাছপালার মধ্যে গড়ে ওঠে দু’টি ভবন। ভবন দু’টি নিয়েই শুরু হয় মূল ক্যাম্পাসের কার্যক্রম।
মাটির সড়কের পরিবর্তে হয়েছে ইট-বালুর সড়ক। জারুল, দেবদারু, কৃষ্ণচূড়া সম্বলিত সবুজ বনায়নের মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠেছে পিচঢালা আঁকাবাঁকা ও সরু রাস্তা। মাটির সড়কের পাশে গড়ে ওঠা দু’টি ভবনের পরিবর্তে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় শতাধিক ভবন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
৪০ বছরের পথ চলায় গড়ে তুলেছে অসংখ্য মেধাবী গ্র্যাজুয়েট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক। দেশের বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি অনুষদের অধীনে ৩৪টি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটে ১৪ হাজার ৫৪৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৪০০ জন শিক্ষক অধ্যাপনা করছেন। ৪৬৪ জন কর্মকর্তা, ১৭০ সহায়ক কর্মচারী এবং ১৮১ জন সাধারণ কর্মচারী নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্মদিন আজ। জন্মলগ্নে শতভাগ আবাসিকতার তকমা গায়ে নিয়ে বেড়ে উঠলেও গড়ে তুলতে পারেনি সম্পূর্ণ আবাসিকতা। প্রতিষ্ঠার ৪০ বছর পরও সে স্বপ্ন এখনও স্বপ্নই রয়ে গেছে।
তবে বর্তমান উপাচার্যের আশ্বাসে আশায় বুক বেঁধেছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর অবহেলিত এ প্রান্তিক বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন ইতোমধ্যে বরাদ্দ পেয়েছে ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট।
প্রজেক্টে ৯টি ১০ তলা ভবন ও ১৯টি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে স্বপ্ন পূরণের দিকে অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এমনটাই ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা।
একই আশা ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এসময় উপাচার্য বলেন, ‘প্রান্তিক জনপদের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান প্রশাসন যে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে এটা সম্পন্ন হলে প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসিকতার আওতায় নিয়ে আসা যাবে। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো। ’
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রশাসনের উদ্যোগে আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিতে অংশগ্রহণকৃত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ফেলে আসা দিনগুলোর ব্যর্থতা ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি ফেলে আসা দিনগুলোর সফলতাকে প্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করে নতুনত্বের মিশ্রণে বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে কাঙ্ক্ষিত চূড়ায় পৌঁছাবে। এমন প্রত্যাশায় আগামীর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে আন্তর্জাতিক মানের।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
আরএ