ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ খুমি শিক্ষার্থী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
প্রথমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ খুমি শিক্ষার্থী

বান্দরবান: বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তার খুমি সম্প্রদায়ের দুই ছাত্র প্রথমবারের মতো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। 

এদের মধ্যে সুইতং খুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনে এবং অংহো খুমি সিলেট শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায়  ভর্তি হয়েছেন।

জানা যায়, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বসবাসরত প্রায় তিন হাজার জনসংখ্যার খুমি সম্প্রদায়ের কোনো শিক্ষার্থী এরআগে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হতে পারেনি।

এই প্রথম দুইজন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারায় উচ্ছ্বসিত খুমি সম্প্রদায়ের জনসাধারণ।  

খুমিদের সামাজিক সংগঠন খুমি কাহুংয়ের সহ-সভাপতি সিংয়ং খুমি বাংলানিউজকে বলেন, খুমিদের মধ্যে প্রথম স্নাতক লেলুং খুমি দেশের কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাস করেন। তবে দুই খুমি শিক্ষার্থীই প্রথম এ দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলো, এটাই সত্যিই গর্বের।

কথা হয় অংহো খুমির সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বান্দরবানের দুর্গম লামা উপজেলার সরই উপজেলার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করি। ২০০৫ সালে আবসিক শিক্ষার্থী হিসেবে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ ভর্তি হয়। ভর্তির পর থেকেই মনে উৎসাহ ও প্রতিজ্ঞা ছিল একদিন ভালো ভাবে এখান থেকে পাস করে দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবো। আজ সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো।  

অংহো খুমির বাবা অংছাই খুমী কৃষিকাজ করেন। তার মা কিংথাই খুমীও একই কাজে সম্পৃক্ত। তিন ভাই এক বোনের দরিদ্র পরিবারে বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলায় বসবাস করে এই অংহো খুমি।

আলাপ হয় সুইতং খুমির সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৭ সালে এসএসসি ও ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করি। এরপর লামা উপজেলা সরই উপজেলার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজ থেকে পাস করি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য চেষ্টা করি। ভগবানের কৃপায় ‘চ’ বিভাগে গ্রাফিক্স ডিজাইনে ভর্তির সুযোগ পায়।

তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ২ নম্বর তারাছা ইউনিয়নে আমাদের আবাস। মা লিং সাই এবং বাবা নয়া লো। দুই ভাই ও ২ বোনের ছোট অসহায় এক পরিবারে বসবাস আমার। বাবা মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্টে মা আমাকে পড়ালেখা করিয়ে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। মার কোনো আয় না থাকায় বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে আমাদের পরিবার চলছে অনেক কষ্টে।

বান্দরবানের লামার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহ আহম্মদ বাংলানিউজকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনে সুইতং খুমি এবং সিলেট শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিদ্যায় অংহো খুমি ভর্তি হতে পেরেছে শুনে আমি খুশি। কারণ তারা দুজনই ছোটকাল থেকে মেধাবী ও পরিশ্রমী ছাত্র ছিল।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।