ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কে ফিরিয়ে দেবে তাহিরার শিক্ষা জীবনের এক বছর

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
কে ফিরিয়ে দেবে তাহিরার শিক্ষা জীবনের এক বছর

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ফল বিভ্রাটের কারণে মেধাবী এক ছাত্রীর শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে গেছে একটি বছর। 

বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ওই ছাত্রীর ফলাফলে বিজ্ঞানের তিনটি বিষয় অকৃতকার্য দেখানো হয়। পুনরায় পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ফর্ম পূরণ করতে গেলে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতে গিয়ে দেখেন তিনি কোনো বিষয় অকৃতকার্য হননি।

 

ওই ছাত্রীর নাম তাহিরা খান। তিনি পাথরঘাটা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন খানের মেয়ে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসএসি পরীক্ষায় অংশ নেন তাহিরা। চলতি বছরের ১৭ জুলাই প্রকাশিত ফলাফল মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে দেখতে পান তিনি বিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিতে অকৃতকার্য হয়েছেন।  

তাহিরার মার্কসিট।  ছবি: বাংলানিউজ

জানা যায়, পাথরঘাটা তাসলিমা মেমোরিয়াল একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৮২ পেয়ে ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পাঠদানরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য দুইবার ভারতে যেতে হয়। সে কারণে মাইলস্টোন থেকে নিজ জেলা বরগুনা সরকারি কলেজে বদলি করে আনেন তার পরিবার। চরম অপ্রত্যাশিত ফলাফলে এতোটাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন যে তাহিরা ফলাফল পুনর্গণনার আবেদনও করেননি।  

পরবর্তীতে পারিবারিক উৎসাহে মানসিক যন্ত্রণা ও সামাজিক বঞ্চনা কাটিয়ে পুনরায় পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তাহিরা। পুনরায় পরীক্ষায় অংশ নিতে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফর্ম পূরণ করার জন্য বরগুনা সরকারি কলেজে গেলে একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট তুলে দেখেন সব বিষয়েই কৃতকার্য হয়ে জিপিএ ৩.৮৩ পেয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসি সম্মিলিত ফলাফলের ভিত্তিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতেন তিনি। তথ্য প্রযুক্তির যুগে এমন ভুল কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা তাহিরা।  

তাহিরার মা সেলিনা খান বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ঢাকায় বাসা ভাড়া করে কোচিং করিয়েছি মেয়েকে বিবাহ দিয়েছি। এমন ফলাফলের পরে যদি আমার মেয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটাতো তাহলে এর দায় কে নিতো?

এদিকে বোর্ডের গাফিলতির কারণে এমনটা হয়েছে যার দায়ভার বোর্ডকেই নিতে হবে বলছেন বরগুনা সরকারি কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ ধরনের ভুল মেনে নেওয়া যায় না। যার মাশুল যেকোনো শিক্ষার্থীকে জীবনব্যাপী বয়ে বেড়াতে হতে পারে।

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইউনুছ বাংলানিউজকে বলেন, একজন পরীক্ষার্থীর ১৩টি সিট থাকে। প্রতিটি সিট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।