ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

কক্সবাজারে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ ৪৯১ পদ শূন্য

নুপা আলম, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১২

কক্সবাজার : কক্সবাজারে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে লোকবল সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। জেলায় সরকারি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৪৯১টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে ।



এর মধ্যে শিক্ষকের ৪৪৮টি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ হচ্ছে ৪৩টি। অপরদিকে খোদ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদটিও শূন্য। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একজন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।

শিক্ষক সংকটের কারণে নতুন বছরের শুরুতেই পাঠ্যবই বিতরণসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে এবং নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১১৬টি। এরমধ্যে সরকারি ৩৭৬টি, রেজিস্টার্ড ২২০টি, কমিউনিটি ৫টি, আন রেজিস্টার্ড ২৭টি, কেজি ১৫০টি, উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ৩টি, এনজিও ১৯টি, পরীক্ষণ ১টি, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী ২২৫টি।

এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের পদ ৩৭৪৪টি। সেখানে ৩২৯৬টিতে লোকবল থাকলেও শূন্য আছে ৪৪৮টি পদ।

অপরদিকে কর্মকর্তা ও কর্মচারির অনুমোদিত পদের মধ্যে বেশিরভাগই শূন্য পড়ে আছে। সেখানে ৩৭টি পদে লোকবল থাকলেও ৪৩টি পদ শূন্য রয়েছে।

জানা যায়, জেলার ৩৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে ৬৭টি তে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারি শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব নিয়ে এসব বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। সহকারি শিক্ষক এর অনুমোদিত পদ রয়েছে ২৪২৩টি। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছে ২১৫৪টি পদে। শূন্য পদ রয়েছে ২৬৯টি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমএলএসএস এর অনুমোদিত পদ রয়েছে মাত্র ৫টি। সেখানে ৫টিই খালি।

২২০টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৬টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারি শিক্ষক এর অনুমোদিত পদ রয়েছে ৬৬৫টি। এর মধ্যে বর্তমানে কর্মরত আছে ৫৯৭টি। শূন্য রয়েছে ৬৮টি।

৫টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক এর অনুমোদিত পদ ৮০টি। এর মধ্যে কর্মরত আছে ৫৭টি। ২৩টি পদ শূন্য রয়েছে|

২জন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মধ্যে কর্মরত আছে একজন। সহকারি মনিটরিং কর্মকর্তার পদও শূন্য।  

জেলার ৮টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ২টি উপজেলায় ২ জন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন।

এদিকে কক্সবাজার সদর, উখিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে।

 সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমোদিত পদ রয়েছে ২৫টি। এর মধ্যে কর্মরত আছে ১৭টি। ৮টি শূন্য পদের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার সদরে ২টি, রামুতে ২টি ও চকরিয়ায় ২টি।

উচ্চমান সহকারী ও ক্যাশিয়ার এর অনুমোদিত পদ রয়েছে ১০টি। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছে ৭টি। শূন্য পদ রয়েছে কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও মহেশখালী উপজেলায়।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এর অনুমোদিত পদ রয়েছে ১৪টি। এর মধ্যে কর্মরত আছে ৬টি। শূন্য পদ রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে ১টি, সদরে ১টি, টেকনাফে ১টি, রামুতে ১টি, চকরিয়ায় ১টি, পেকুয়ায় ১টি, কুতুবদিয়ায় ১টি ও মহেশখালীতে ১টি।

হিসাব সহকারী ৮ উপজেলায় ৮টি পদ অনুমোদিত থাকলেও সকল উপজেলায় এই পদ শূন্য। এমএলএসএস এর পদ অনুমোদিত রয়েছে ৯টি। এর মধ্যে কর্মরত আছে মাত্র ১টি পদে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারি সংকট চলছে। নতুন বছরে সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যের পাঠ্য বই সরবরাহ করলেও শিক্ষক ও কর্মচারি সংকট থাকায়  জেলার শিক্ষার মান বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

 নতুন বছরে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় সংকট আরো বাড়তে পারে এমন আশংকা অভিভাবক মহলের।

কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তাপস কুমার পাল বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারির শূন্য পদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু তা পুরণ হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময় : ১৫৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।