ঢাকা: বিশ্বের উন্নত দেশেগুলোর শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষাসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) অনলাইন ও ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও কমনওয়েলথ এডুকেশনাল মিডিয়া সেন্টার ফর এশিয়ার (সেমকা) যৌথ উদ্যোগে ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত ২০ দিনের এ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ট্রেজারার ও স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল আজাদ।
অনুষ্ঠানে সেমকার পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রফেসর ড. মাধু পারহাড় ও সিনিয়র প্রোগাম অফিসার (এডুকেশন) ড. মানস রঞ্জন পানিগ্রাহী। ইউজিসির আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া কর্মশালায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রযুক্তি শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রেই কাজের ধরনে বড় রকমের পরিবর্তন এনেছে। বৈশ্বিক এ বাস্তবতা অনুধাবন করতে না পারলে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পিছিয়ে পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন ও ব্লেন্ডেড লার্নিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই কর্মশালা অনলাইন, ব্লেন্ডেড লার্নিং ও লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, অনলাইন ও ব্লেন্ডেড লার্নিং সম্পর্কে শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা না গেলে এই শিক্ষা কার্যক্রম কার্যকর করা যাবে না। করোনা পরবর্তী সময়েও অনলাইন শিক্ষা ও ব্লেন্ডেড লার্নিং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। এ ব্যবস্থাকে টেকসই করতে ইউজিসি ব্লেন্ডেড লার্নিং পলিসির খসড়া চূড়ান্ত করেছে, যা প্রশাসনিক অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। উচ্চশিক্ষাখাতকে এগিয়ে নিতে প্রযুক্তির ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে না পারলে বৈশ্বিক শ্রমবাজারে প্রতিযোগিতায় আমাদের গ্রাজুয়েটরা টিকে থাকতে পারবে না। তাই, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করে অনলাইন শিক্ষা ও ব্লেন্ডেড লার্নিং সিস্টেম কার্যকর করতে আমাদের দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।
প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, অনলাইন শিক্ষা ও ব্লেন্ডেড লার্নিং কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য দ্রুত এ সংক্রান্ত একটি পলিসি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। পলিসি প্রণয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর দিকগুলো অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে।
ইউজিসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান জানান, বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে ১৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪৩ লাখ। শিক্ষার মান উন্নয়ন করা না গেলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে উঠবে না। তাই, শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ইউজিসি এক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কাজ করছে।
২০ দিনের এই কর্মশালায় দেশের ২০টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার জন শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন। কর্মশালায় অনলাইন শিক্ষা, ব্লেন্ডেড লার্নিং এবং লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বিভিন্ন দিক নিয়ে সেশন পরিচালনা করছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ট্রেজারার ও স্কুল অব বিজনেসের ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল আজাদ, সেমকার লার্নিং প্রোগ্রাম ফেসিলিটেটর পুরানদার সেনগুপ্ত এবং ন্যাশনাল ট্রেইনার ড. শৌনাক রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ