মিরসরাই (চট্টগ্রাম): মিরসরাইয়ে মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোস্তফা কলেজের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও শিক্ষক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোস্তফা অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাতা মেজর মোস্তফার সভাপতিত্বে ও কলেজের প্রভাষক মো. মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির খানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মিসেস মোস্তফা, শামীম রেজা, কাশফিয়া আলম দোলা, সামিনা জাহান, সৈয়দ মহমুদ আলী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শিরীন আখতার বলেন, বিজয়ের মাসে এ বীর মুক্তিযোদ্ধার কলেজের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, যিনি ৭১ এ সফল হয়েছেন, দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন, সেই মুক্তিযোদ্ধার এ প্রতিষ্ঠান সফল হবেই। এ প্রত্যন্ত অঞ্চল পরিণত হবে শিক্ষার বাতিঘরে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. আইয়ুব নজরী বলেন, মেজর মোস্তফা কলেজে এসএসসিতে এ প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়া ও বিনামূল্যে বই বিতরণসহ প্রতিষ্ঠাতা বৃত্তির সু-ব্যবস্থা থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা বলেন, এ কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমি ঘাটে ঘাটে বাধাগ্রস্ত হয়েছিলাম। কিন্তু আমার নিষ্ঠার কাছে সব বাধা একসময় হার মানে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কলেজটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। এ অঞ্চলটা একটা প্রত্যন্ত অঞ্চল। এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের দূরের কলেজে পড়াশোনা করতে হয়। তাদের এ দুর্ভোগ যেন কেটে উঠে এবং তারা যেন সহজে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জন করতে পারে এ লক্ষ্যে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রতিষ্ঠানটি সাফল্যমণ্ডিত করতে তিনি সমাজের মানুষের, বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ও কলেজের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমর্থন ও সহযোগিতার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোস্তফা কলেজটি ২০১৯ সালে উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে অবস্থিত। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ প্রতিষ্ঠানটিতে দূরবর্তী ছাত্রছাত্রীদের কলেজ ক্যাম্পাসে আসার সুবিধার্থে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা ও আবাসিক সুবিধা রয়েছে। গ্রামীণ নৈসর্গিক পরিবেশে গড়ে উঠা এ ৫তলা বিশিষ্ট নিজস্ব কলেজ ভবনের শ্রেণিকক্ষে শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে পাঠদানের সুযোগ থাকায় অভিভাবকরা সন্তানদের এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে আগ্রহী।
কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মেজর মোস্তফা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লেফটেন্যান্ট পদবীতে ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলাতে গেরিলা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। ২০১৯ সালে নিজের জন্মস্থানে মুক্তিযোদ্ধা মেজর মোস্তফা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস