খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে বিএনকিউএফ (বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক) অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড ক্রাইটেরিয়া শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ কর্মশালার উদ্বোধন সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (বিএসি) সদস্য ইশতিয়াক আহমেদ।
তিনি বলেন, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজাতে না পারলে, বিশ্বমান অর্জন করতে না পারলে অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে না। সরকার এজন্য নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে এ অভিলক্ষ্য পূরণে উদ্যোগী হয়েছে। দেশের স্বার্থে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আমাদের বিশ্বমানের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। তা না হলে এ লাখ লাখ শিক্ষিত গ্র্যাজুয়েট দেশে কাজ পাবে না, সৃজনশীল হবে না এবং বিদেশে স্বীকৃতি ও চাকরি পাবে না।
ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রমের মাত্র তিন দশক অতিক্রম করেছে। কিন্তু দেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় এ বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরিতে সক্ষম হয়েছে। বিএনকিউএফ এর শর্তপূরণে এ বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রবর্তী অবস্থানে রয়েছে, যা অ্যাক্রিডিটেশন লাভে সহায়ক হবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন দৃঢ়ভাবে আশাবাদ ব্যক্ত করে ঘোষণা দেন যে, শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আগামী ২০২২ সালের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনকিউএফ-এর স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড ক্রাইটেরিয়ার প্রায় সব শর্তপূরণে সক্ষম হবে। যার অভিলক্ষ্য হবে অ্যাক্রিডিটেশন অর্জন করে বিশ্বমানে পৌঁছানো। উপাচার্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে গৃহীত পদক্ষেপ, ইতোমধ্যকার অর্জন এবং একাডেমিক বিভিন্ন বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি গবেষণা জোরদারে নানামুখী পদক্ষেপ, মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে স্কলারশিপ প্রদান, সম্প্রতি ৬২ জন গবেষককে ২ কোটি টাকারও বেশি অনুদান প্রদান, মাঠ গবেষণা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণে জমি অধিগ্রহণ পদক্ষেপ, লাইব্রেরি অটোমেশনের উদ্যোগ, উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা প্রবর্তন, ইনোভেশন হাব তৈরি, কারিকুলা হালনাগাদকরণ, অর্গানোগ্রাম অনুমোদনে পদক্ষেপের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
মাহমুদ হোসেন বলেন, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন পাইলটিং করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা সব ডিসিপ্লিনে যুক্ত করা হবে। ই-নথি কার্যক্রমও অচিরেই শুরু হবে। এছাড়া তিনি সিনেটের নিয়মিত অধিবেশন ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথাও ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ইতোমধ্যে বিএনকিউএফ স্ট্যান্ডার্ড ও ক্রাইটেরিয়া অনুমোদন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি যে, প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করে যাতে অ্যাক্রিডিটেশন লাভ করতে পারি। সর্বাত্মকভাবে সে প্রচেষ্টা চালানো হবে।
উপাচার্য বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্যে রয়েছি। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা ও সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এ দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার প্রধান অধিক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৈরির কারিগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপরই বহুলাংশে নির্ভর করে জাতির ভবিষ্যৎ, প্রজন্মকে দক্ষ করে, উপযোগী করে বিশ্বনাগরিক হিসেবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা তৈরি।
কর্মশালার উদ্বোধনী স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মো. সারওয়ার জাহান। পরে কর্মশালায় বিএনকিউএফে অভীষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করেন বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী ও প্রফেসর ড. এস এম কবির। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান ও শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২১
এমআরএম/আরবি