ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

খুবিতে কটকা ট্রাজেডি স্মরণে শোক দিবস পালিত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
খুবিতে কটকা ট্রাজেডি স্মরণে শোক দিবস পালিত শোক দিবসের র‌্যালি।

খুলনা: নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কটকা ট্রাজেডি স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) শোক দিবস পালিত হয়েছে।

২০০৪ সালের এ দিনে সুন্দরবনের কটকায় সফরে গিয়ে খুবির স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের ৯ জন এবং বুয়েটের দুইজনসহ মোট ১১ জন ছাত্র-ছাত্রী সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়ে শাহাদতবরণ করেন।

সেই থেকে প্রতিবছর দিনটিতে খুবি শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

রোববার (১৩ মার্চ) এবছর এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে সাজানো হয় শোকাবহ সাজে। ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর থেকে কটকা স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের সারিবদ্ধ গাছে কালো কাপড় জড়ানো এবং শহীদ শিক্ষার্থীদের প্রতিচ্ছবি কাঠে খোদাই করে শোকের আবহ তৈরি করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস পালন উপলক্ষে সকাল ১০টায় কালোব্যাজ ধারণ করে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বর থেকে একটি শোকর‌্যালি শুরু হয়ে কটকা স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়।  

শোক র‌্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধান, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, প্রভোস্ট ও বিভাগীয় প্রধানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন। এর পরপরই কটকা স্মৃতিস্তম্ভে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রথমে উপাচার্য শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

পরে খুবি স্থাপত্য ডিসিপ্লিন, ইংরেজি ডিসিপ্লিন, রসায়ন ডিসিপ্লিন, সয়েল ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিন, অপরাজিতা হল, খানজাহান আলী হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ হল, শিক্ষক সমিতি, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ, শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওংকার শৃণুতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

এছাড়া সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত শাহাদাতবরণকারী শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।  

তিনি বলেন, ২০০৪ সালের এদিনে আমরা দেশের কৃতি সন্তানদের হারিয়েছি। আজ তারা বেঁচে থাকলে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারতেন। তাদের মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়েছে তা আর কোনো দিন পূরণ হবে না। আমি তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।  

তিনি আরও বলেন, আজকের এ দিনটি শুধুই শোক দিবস নয়, এটি আমাদের সবার জন্য সচেতনতা দিবস। বিশেষ করে প্রতিবছর সেশনাল ট্যুর করতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা দেশের বিভিন্ন স্থানে যাই। এক্ষেত্রে সেসব স্থানে চলাচলের জন্য আমাদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে এবং সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যেনো এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে। স্থাপত্য ডিসিপ্লিন প্রধান ও সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন। পরে শাহাদাতবরণকারী শিক্ষার্থীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।  

দোয়া পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাও. মুফতি আব্দুল কুদ্দুস।

দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বেলা ১১টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন, বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল, এতিমদের সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজ, সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং সন্ধ্যা ৭টায় স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের আয়োজনে শোকসভা ও স্মৃতিচারণ (অফলাইন ও অনলাইন)।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২২
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।