দিনাজপুর: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদের পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে চঞ্চল রায় নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বিকে উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষক চঞ্চলকে স্কুল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে পরীক্ষা বর্জন করে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে বীরগঞ্জ-গড়েয়া সড়কের পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাস্তা অবরোধ করে ছাত্ররা।
এর আগে সোমাবার (৬ জুন) পরীক্ষা শেষে চেয়ারে চুইংগাম লাগানোর অভিযোগে ক্লাস রুমের দরজা বন্ধ করে শিক্ষক চঞ্চল রায় ২০ থেকে ২২ জন ছাত্রকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ঘটনার পরপরই স্কুলে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযুক্ত শিক্ষক উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার চন্দ্র কান্ত রায়ের ছেলে। বারবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের নের বিকে উচ্চ বিদ্যালয়ে সোমবার (৬ জুন) ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালে সহকারী শিক্ষক চঞ্চল রায়ের চেয়ারে কোনো এক ছাত্র চুইংগাম লাগিয়ে দেয়। এতে শিক্ষক চঞ্চল রায় পরীক্ষা শেষে রুমের দরজা লাগিয়ে নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ২০/২২ জন ছাত্রকে আটকে রেখে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জানতে পেরে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এলে চঞ্চল রায় বিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে যান। এসময় অভিভাবক ও ছাত্ররা বিদ্যালয়ে অবস্থান নিলে পলাশবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ সিদ্দিকী মানিক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি ডা. পরেশ চন্দ্র রায়, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিদ্যালয়ের এমন খরব পেয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কন্দর্প নারায়ণ রায় সেখানে উপস্থিত হয়ে ছাত্র ও অভিভাবকদের শান্ত করে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে সরিয়ে স্কুলে নিয়ে যান। তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ছাত্র ও অভিভাবকদের অভিযোগ শুনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষক চঞ্চল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে সবার সিদ্ধান্ত মতে রেজুলেশনের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক চঞ্চল রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়ে শোকজ করা হয়েছে।
ওই বৈঠকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েলুর রহমান জুয়েল, বিদ্যালয়ের সভাপতি ডা. পরেশ চন্দ্র রায়, প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খাঁজা নাজিম উদ্দীন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বকুল সাহা, প্রফেসার সাইফুল ইসলাম, ইউপি সদস্য সহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে কন্দর্প নারায়ণ রায় বলেন, প্রাথমিকভাবে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক চঞ্চল রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে শোকজ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২২
এসআই