ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বৈধ সিটে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী তুলতে ছাত্রলীগে মারামারি

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
বৈধ সিটে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী তুলতে ছাত্রলীগে মারামারি

ইবি : এক শিক্ষার্থীর বৈধ সিটে অবৈধভাবে অন্য শিক্ষার্থী তোলা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। শনিবার (২৩ জুলাই) রাত থেকে লালন শাহ হলে রোববার (২৪ জুলাই) ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় হট্টগোল ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

পরবর্তীতে সংগঠনের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ও প্রোক্টরিয়াল বডির মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি সমাধানে তারা আশ্বাসও দিয়েছেন।

জানা গেছে, লালন শাহ হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষের বৈধ দুই জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী বেশিরভাগ সময় বাইরে অবস্থান করেন। তাই ওই সিটে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থীকে তুলতে চান হল ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান।

এদিকে শাকিল নামে ওই কক্ষে অবস্থানরত আরেক ছাত্রলীগ কর্মী ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র অতিথি হিসেবে দুজনকে সিটটিতে রাখেন। স্থায়ীভাবে তাদের ওই সিটে রাখার পরিকল্পনাও করেন তিনি।

শনিবার (২৩ জুলাই) রাত ১১টার দিকে মোস্তাফিজ ওই কক্ষে যান। সেখানে অতিথি হিসেবে যারা ছিলেন, তাদের সিট খালি করে দিতে বলেন। এতে বাধা দেন শাকিল।

এ নিয়ে কক্ষের সামনে মোস্তাফিজ ও শাকিলের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জেরে ভোর ৩টার দিকে মোস্তাফিজ ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন মিলে শাকিলকে মারধর করেন।

শাকিলের অভিযোগ, রাতে হলের করিডরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মোস্তাফিজ এসে তাকে হুমকি-ধমকি দেন। একপর্যায়ে চড়-থাপ্পড় দেন, মারধরও করেন। তার সঙ্গে থাকা আরও কজন নেতাকর্মী শাকিলকে হুমকি ধামকি ও মারধরে সহযোগিতা করেন।

পরে লালন শাহ ও অন্যান্য হল থেকে আসা শাকিলের বন্ধুরা মোস্তাফিজের ওপর চড়াও হলে তিনি পালিয়ে যান। পরে শাকিল ও তার বন্ধুরা হলের করিডরে অবস্থান নেন। কয়েকজন মোস্তাফিজকে খুঁজতে শুরু করেন।

এ সময় ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা হলে গিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত হতে বলেন। কিন্তু তারা এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখান। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খান ও আলামিন জোয়ার্দার এসে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

এর পরই ঘটনাস্থলে আসেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টর শফিকুল ইসলাম, মুর্শিদ আলম, শাহাবুব আলম ও শরিফুল ইসলাম জুয়েল। শাকিল তাদের কাছে অভিযোগ করলে হল প্রভোস্ট, প্রোক্টরিয়াল বডি ও উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে শাকিলসহ সবাই নিজ নিজ কক্ষে ফেরত যান।

বিষয়টি নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ওই ব্লকের অন্য শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে, কক্ষটির সিট যে শিক্ষার্থীর তিনি সেখানে না থাকায় শাকিল ও তার বন্ধুরা নিয়মিত মাদক সেবন করতো। তার বন্ধু সিনহা, জ্যোতি, বন্ধনসহ অন্য হল থেকে কয়েকজন এসে আসরে যোগ দিত। আমরা এটি রোধে করতে নতুন একজনকে তুলতে চেয়েছিলাম। এতে ওদের আসর বসাতে সমস্যা হবে, এ জন্য বাধা দেয়। একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডা হয়েছে। আর ৩টার দিকে চা খেয়ে ওপরে আসার সময় আবার বাগবিতণ্ডা শুরু করলে বাকি ঘটনা ঘটে।

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় প্রোক্টরিয়াল বডি হলে যায়। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। হল প্রশাসন আলোচনা করবে। পরে প্রোক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসবো।

বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।