ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ইবি উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
ইবি উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বাদী হয়ে প্যানাল কোডের ১৪৩, ৪৪৭, ৩৪২, ১৮৬, ৪২৭ এবং ৫০৬ ধারায় ইবি থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলা নম্বর ০৬।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ইবি থানা পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) উপাচার্যের কার্যালয়ে তার একান্ত সহকারীর কক্ষ ভাঙচুর ও তাকে গালিগালাজ করে রুম থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের নির্দেশে রেজিস্ট্রার ইবি থানায় মামলা দায়ে করেন।

রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগে পিএস-১ আইয়ুব আলী ও পিএস-২ মনিরুজ্জামান মোল্লা বলেন, শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আনুমানিক আড়াইটার সময় আমরা দুজন দুপুরের খাবার শেষ করে অফিসে ফাইলের কাজ করছিলাম। এ সময় টিটু মিজান ও রাসেল জোয়ার্দারের নেতৃত্বে প্রায় ১৫-২০ জন বহিরাগত আমাদের ওপর চড়াও হয়ে দুজনকে দুই রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে। আমার রুম ( মো. আইয়ুব আলী) ভাঙচুর করে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ করে এবং অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে রুম থেকে বের করে দেয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দুরূহ হবে। এমতাবস্থায় আমরা দুজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।

মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, 'উপাচার্যের কার্যালয়ে হামলা করা তো ক্রিমিনাল অ্যাক্ট। তাছাড়া তারা বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ না। যেহেতু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে তাই আমাদের আইনি পদক্ষেপের দিকে যেতেই হবে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি ও প্রশাসনের অন্যান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেই।

জানা যায়, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অ্যালামনাই প্রোগ্রাম শেষ করে উপাচার্যের একান্ত সহকারী আইয়ুব আলী প্রশাসন ভবনে তার কক্ষে যান। কার্যালয়ে যাওয়ার পর পরই চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।  
 
এ সময় পিএস আইয়ুব আলী দুপুরে খাবার খাচ্ছিলেন। খাবার শেষ করে কক্ষে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অস্থায়ী কর্মচারী পরিষদের সভাপতি টিটু মিজান, সাধারণ সম্পাদক রাসেল জোয়ার্দারে নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মী প্রবেশ করেন। চাকরিপ্রত্যাশীরা তাদের বেতন-ভাতার ফাইলের বিষয়ে পিএসের কাছে জানতে চান।  

পিএস আইয়ুব আলী তাদের ফাইলের বিষয়ে জানেন না বলে তাদের জানান। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে টেবিলে থাকা বিভিন্ন ফাইল ছুড়ে ফেলে দেন। সেখানে থাকা টেবিল, চেয়ার ভাঙচুর করেন। পাশাপাশি তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে কক্ষ থেকে বের করে দেন। পরে আইয়ুব আলী রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।  

অপরদিকে চাকরিপ্রত্যাশী অস্থায়ী কর্মচারীরা জয় বাংলা স্লোগান দিতে দিতে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে নেমে এসে প্রশাসন ভবনের ফটকে দাঁড়ান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরূদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান, বক্তব্য দিতে থাকেন।  

এ সময় তারা তাদের বেতন ভাতা দ্রুত কার্যকর না করা হলে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটাবে বলে জানান। পাশাপাশি তাদের বেতন ভাতার ফাইল পাস না হলে ও চাকরি স্থায়ী না করা হলে ক্যাম্পাসে কোনো নিয়োগ বোর্ড হতে দেবে না বলেও জানান।  

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম, ড. আমজাদ হোসেন, ড. শাহেদ হাসান, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুটসহ অন্যন্য কর্মকর্তারা পিএসের কক্ষ পরিদর্শন করেন।

পিএসের কক্ষ ভাঙচুর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি এটিএম এমদাদুল হক সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়:০৯৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।