খুলনা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ইংরেজি ডিসিপ্লিনে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা র্যাগিং ও মাদককে না বলার শপথ নিয়েছেন। আর ছাত্রবিষয়ক পরিচালক জানিয়েছেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) বাধ্যবাধকতায় মাদকাসক্ত এবং র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ডাটাবেজে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে।
বলেছেন, তাদের নামের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) যাবে। পুলিশ প্রতিবেদনেও এখন যে অপশন রাখা হয়েছে সেখানেও উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা থাকছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অত্যন্ত সচেতন হতে হবে যাতে শিক্ষা জীবনে এসব কর্মকাণ্ড ও আসক্তিতে তারা সম্পৃক্ত না হয়।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ১৮ ব্যাচ, মাস্টার্সের ২টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় এবং ২০ ও ২১ ব্যাচের নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।
ইংরেজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. রুবেল আনছার। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সাফল্যই শিক্ষকদের একান্ত কাম্য। শিক্ষার্থীরা এতো বড়ো অবস্থান তৈরি করুক বা সাফল্যে অর্জন করুক শিক্ষকরা তাদেরকে যেন মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখে। শিক্ষকদেরকে তারা যেন অতিক্রম করে যায়। তিনি নবাগত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচ যখন শিক্ষাকোর্স সম্পন্ন করে বের হয়ে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করে তখন তারা সর্বত্র সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। তাই তাদের মাধ্যমে দেশ, পরিবার, শিক্ষক তথা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও সুনাম বাড়ে। নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি যেটা ভালো সেটা অনুসরণ বা অনুকরণের এবং যেটা খারাপ তা ত্যাগ করা ও এর বিরুদ্ধে দাঁড়াবার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে খারাপ সংঘের সঙ্গে মুষ্টিমেয় কিছু শিক্ষার্থী জড়িত, তারা ভালোদেরকেও খারাপ পথে টেনে নেয়। এ থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এপিএর বাধ্যবাধকতায় মাদক বা র্যাগিংয়ের সঙ্গে অভিযুক্তদের নাম, তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ডাটাবেজে ও ইউজিসিতে যাবে। পুলিশ প্রতিবেদনেও এসব তথ্য থাকছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পেশা জীবনে প্রবেশ করতে এসব যাতে মোকাবিলা করতে না হয়, সেজন্য অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে।
এ সময় মাদক ও র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থানের প্রশংসা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আইন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. ওয়ালিউল হাসানাত, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক, প্রফেসর ড. শায়লা শারমিন স্নিগ্ধা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মো. সামিউল হক।
বিদায়ী ও নাবগত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহীন আলম, ফাতেমা তুজ জোহরা, নাফিসা বিনতে রহমান, সুমাইয়া আক্তার ইপ্তি, মিতু জোয়াদ্দার, মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম, নওসাদ হাসান নিলয়, খালিদ হাসান বাপ্পী, সাইফুল্লাহ সিদ্দীকি ও জান্নাতুল নাহার নীনা।
অনুষ্ঠানে ইংরেজি ডিসিপ্লিন প্রধান নাবগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। তিনি এই ডিসিপ্লিনকে সবিশেষ মর্যাদার স্থানে নিয়ে যেতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। পরে বিকেলে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ সময় ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড