ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, (ইবি): নানা সমস্যায় জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হল। পুরাতন হওয়ায় প্রতিনিয়ত সংকট দেখা দিচ্ছে হল ভবনে।
এর আগে হলে পানি সংকট দেখা দেয়। তীব্র সমালোচনা শুরু হয় এ সময়। পরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভোগান্তির ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। গত ২১ নভেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশের পর পানি সংকটের সমাধান হয়। নতুন করে আবারও এক সমস্যা শুরু হয়েছে হল ভবনে। ডাইনিংসহ কয়েকটি কক্ষের পলেস্তারা খসে পড়ছে হলের। এ নিয়ে ক্ষোভ জমছে আবাসিক ছাত্রদের মধ্যে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাদ্দাম হোসেন হলের ডাইনিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়ে। যদিও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ছাত্রদের মধ্যে বিরাজ করছে নানা শঙ্কা। প্রায়ই এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ ছাত্র ও ডাইনিং কর্মচারীদের।
হলের ডাইনিং ম্যানেজার আবেদ খান জানান, এর আগেও কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে হলের কর্তাব্যক্তিদের জানানো হয়। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। পলেস্তারা খসে বালু, খোয়া খাবারের মধ্যে পড়ে। ছাত্ররা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে। ডাইনিং কর্মচারীদের নামে অভিযোগ হয়।
তিনি বলেন, কয়েকদফা এ বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আতঙ্ক ও ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে আমাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাদ্দাম হোসেন হল ডাইনিংয়ের রান্নাঘরে চুলার পাশে বিশালাকার পলেস্তারা পড়ে আছে। এছাড়া ছাদের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের একাধিক জায়গায় পলেস্তারা খসে বেরিয়ে পড়েছে রড। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন আবাসিক বাসিন্দারা।
ডাইনিংয়ের কর্মচারী রাসেল জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি রান্নাঘরে ঢোকেন। এ সময় বড় আকারে পলেস্তারা খসে পড়ে। সেটি তার মাথায় পড়তে পারত। হল প্রশাসনকে ম্যানেজার বিষয়টি জানালে লোকজন এসে অভিযোগ লিখে নিয়ে গেছেন। আগেও এমন ঘটনা ঘটে। বলা হলে তারা লিখে নিয়ে যায়। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না।
ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডাইনিং ছাড়াও তাদের কয়েকটি কক্ষে পলেস্তারা খসার সমস্যা রয়েছে। কখন কি হয়ে যায়, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন তারা। বিষয়টি নিয়ে হল প্রভোস্টসহ কর্তাব্যক্তিদের জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। এর আগেও এমন কিছু ঘটনায় অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু বাজেট সমস্যার দোহাই দিয়ে ক্ষান্ত হয়ে যান তারা।
তারা অভিযোগ করে আরও জানান, কিছুদিন আগে একজনের পায়ের ওপর পলেস্তারা পড়ে। ওই ব্যক্তি এতে মারাত্মক আহত হন। কেউ মারা গেলে এ দায় কে নেবে?
সাদ্দাম হোসেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, হল অনেক পুরনো। সংস্কার করলেও কিছুদিন পর আবার নষ্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রকৌশল অফিস থেকে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রধান প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ছাদটি পুরোপুরি ড্যাম হয়ে গেছে। ফলে রান্নাঘর ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। শনিবার (২৬ নভেম্বর) আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো। তারপর পরিকল্পনা মোতাবেক নতুনভাবে কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এমজে