ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

রাজশাহীতে এবার নারীরাই নিয়ামক শক্তি

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৮
রাজশাহীতে এবার নারীরাই নিয়ামক শক্তি নারী ভোটার।

রাজশাহী: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার রাজশাহীতে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটার সংখ্যাই বেশি। ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতেই রয়েছে এ চিত্র। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি নারী ভোটার রয়েছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনে। সিটি করপোরেশন এলাকা নিয়ে গঠিত আসনটিতে পুরুষের চেয়ে ৬ হাজার ৩৮ জন নারী ভোটার বেশি।

রাজশাহী জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী রাজশাহীর ছয়টি আসনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৪২ হাজার ৫৬২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ জন এবং নারী ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৮৫২ জন।

 

এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীতে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৭ জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯০৫ জন। তাই নারী ভোটারদেরই এবার জয়ের নিয়ামক শক্তি বলা হচ্ছে।  

আর রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনের এ সংখ্যক ভোটাররা এবার জেলার ৬৯৫টি কেন্দ্রে মোট ৪ হাজার ১৩৪টি কক্ষের মাধ্যমে তাদের রায় দেবেন। বরাবরের মতো এবারও নারী ও পুরুষ ভোটারদের জন্য আলাদা ভোটকক্ষ থাকবে।

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর): এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ৩৫২ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৭২৩ ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯০ হাজার ৬১৯ জন। আসনটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৪৫টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৭৬২টি। যার মধ্যে ৩৭৫টি পুরুষদের ও ৩৮৭টি নারীদের। গোদাগাড়ীতে ভোটকেন্দ্র ৯৪টি এবং ভোটকক্ষ ৪৫০টি। রাজশাহীর তানোরে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫১টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা রয়েছে ৩১২টি। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন- ব্যারিস্টার আমিনুল হক।

রাজশাহী-২ (সদর): রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সদর আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ৮৫২ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৭ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন।  

ফলে এ আসনে ৬ হাজার ৩৮ জন নারী ভোটার বেশি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা পেয়েছিলেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৯ ভোট। আর চারদলীয় জোটের প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ৫০ ভোট। এবারও এ দুই গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এবার এ আসনে ভোটের ফলাফলকে নারী ভোটাররা প্রভাবিত করতে পারেন বলে এলাকায় আলোচনা রয়েছে।

রাজশাহী সদর আসনটিতে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৪টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৭৭৮টি। এর মধ্যে পুরুষদের ৩৭৫টি ও নারীদের জন্য ৪০৩টি ভোটকক্ষ রয়েছে। রাজপাড়া জোনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬০ এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা রয়েছে ৩৩১টি। আর বোয়ালিয়া জোনের জন্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা রয়েছে ৪৪টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৪৭টি।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর): রাজশাহী শহর ঘেঁষা এ আসনে নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪০ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৩৫ জন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আয়েন উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে মাঠে লড়বেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শফিকুল হক মিলন। এখানে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১২০টি এবং ভোটকক্ষ ৭৩৩টি। পুরুষদের জন্য ৩৬৫টি ও নারীদের জন্য ৩৬৮টি ভোটকক্ষ রয়েছে। পবায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৬টি ও ভোটকক্ষ ৪৪০টি এবং মোহনপুর ভোটকেন্দ্র ৪৪টি ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ২৯৩টি।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা): এ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৭ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১১ জন। আসনটিতে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৬টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫৫৮টি। যার মধ্যে পুরুষদের ২৭৮টি ও নারীদের ২৮০টি ভোটকক্ষ রয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর): এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১ হাজার ৬৭৬ জন। যার মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ২২৮ ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫১ হাজার ৪২৭ জন। আসনটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১৩টি এবং ভোটকক্ষ ৭৮২টি। এরমধ্যে পুরুষদের ৩৯২টি ও নারীদের জন্য ভোটকক্ষ থাকবে ৩৯০টি। দুর্গাপুর ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫৩টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৪৩৯টি। পুঠিয়া ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৬০টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৩৪৩টি। আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন ডা. মনসুর রহমান। বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন অধ্যাপক নজরুল নজরুল ইসলাম।

রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা): এ আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৪ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৯৭ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৬০১ জন। আসনটিতে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৭টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৬২১টি। এরমধ্যে পুরুষদের ভোটকক্ষ ৩১১টি ও নারীদের ৩১০টি। চারঘাটে ৫২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ভোটকক্ষের সংখ্যা ৩২৯টি। বাঘায় ৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ভোটকক্ষের সংখ্যা ২৯২টি। আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বিএনপির প্রার্থী হলেন- সদ্য সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁদ।

রাজশাহী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ তালিকাই চূড়ান্ত। এরইমধ্যে তালিকাটি নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোটার তালিকানুযায়ী রাজশাহীর ছয়টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে। বৈধ প্রার্থীরা ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। পরদিন ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তারপর প্রার্থীরা ১১ ডিসেম্বর থেকেই প্রচারে নামতে পারবেন বলে জানান এ নির্বাচন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৮
এসএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।