ভারতে আর্টহাউজ সিনেমার অন্যতম পথিকৃৎ নির্মাতা কুমার সাহানি আর নেই। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তিনি মারা গেছেন।
ছয় দশকের ক্যারিয়ারে তিনি ‘মায়া দর্পণ’ (১৯৭২), ‘তরঙ্গ’ (১৯৮৪), ‘খেয়াল গাঁথা’ (১৯৮৯) এবং ‘কাসবা’ (১৯৯০)-এর মতো কালজয়ী সব সিনেমা নির্মাণ করেছেন। তার এই যুগান্তকারী সিনেমাগুলো বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বম্বে ইউনিভার্সিটিতে পলিটিক্যাল সাইন্সে পড়াশোনা করেছেন সাহানি। এরপর পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ায় (এফটিআইআই) পড়াশোনা করেন। সেখানে পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ঘটকের সবচেয়ে প্রিয় শিষ্যদের একজন ছিলেন সাহানি। তার চলচ্চিত্রে ঘটকের প্রভাব থেকে যায়।
কুমার সাহানির প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘মায়া দর্পণ’। ১৯৭২ সালে নির্মল ভার্মার গল্প অবলম্বনে সিনেমাটি তৈরি করেন তিনি। এই সিনেমার জন্য সেরা ফিচার ফিল্ম বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান সাহানি।
এরপরের সিনেমা ‘তরঙ্গ’ নির্মাণের খরচ জোগাতে তার ১২ বছর লেগে যায়। পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক কাঠামো এবং শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে তৈরি এই সিনেমায় অমোল পালেকার একজন অনৈতিক ব্যবসায়ীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন যিনি একজন ট্রেড ইউনিয়ন নেতার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ট্রেড ইউনিয়ন নেতার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্মিতা পাতিল।
‘খেয়াল গাঁথা’ সিনেমাটি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে খেয়াল গানের বিবর্তনের একটি কাল্পনিক উপস্থাপনা। ‘কসবা’ রাশিয়ান লেখক আন্তন চেকভের উপন্যাস ‘ইন দ্য গাল্লি টু হিমাচল প্রদেশ’র অনুপ্রেরণায় তৈরি হয়েছে এটি। সিনেমাতে কাংড়া চিত্রকলার ঐতিহ্য ব্যবহার করা হয়েছে।
নির্মাতার আরেক সিনেমা ‘চার অধ্যায়’ (১৯৯৭) তৈরি করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস অবলম্বনে। এই সিনেমার প্রেক্ষাপট ১৯৩০ ও ১৯৪০-এর দশকের পরবর্তী বঙ্গীয় নবজাগরণ যুগ।
পরিচালনার পাশাপাশি লেখালেখিতেও অনন্য ছিলেন কুমার সাহানি। তার ‘দ্য শক অব ডিজায়ার অ্যান্ড আদার এসেস’ বইটি ব্যাপকভাবে আলোচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
এনএটি