চলচ্চিত্র নিয়ে অশ্লীল ও বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগ এনে অভিনেতা পীরজাদা শহীদুল হারুনকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। শনিবার (২৪ আগস্ট) সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার কাছে এই অভিনেতাকে কোনো সিনেমায় না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন। তার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানা গেছে। এদিকে, চলচ্চিত্র প্রযোজকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে প্রযোজকরা।
কী বলেছিলেন পীরজাদা হারুন? সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে এই অভিনেতা বলেছিলেন, একসময় এফডিসি থেকে অভিনেতা রাজীবকে আউট করে অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি এফডিসি সম্পর্কে অবগত না থাকায় দেখভালের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়। তিনি শুধু সাক্ষর করতেন। তখন দেখি ১২০টি রুম আছে বিভিন্ন প্রযোজকদের নামে। সেখানে মাদক ও নারী ব্যবসাসহ সব কিছু হতো। এমডিকে অবগত করে তখন রুমগুলো দখল মুক্ত করি। সন্ধ্যার পর থেকে এফডিসিতে মাদক সেবন ও নারী ব্যবসা হয়। ওই রুমগুলো আবার দখল হয়েছে। এগুলো বন্ধ করা দরকার। এফডিসি পবিত্র জায়গা। পবিত্র জায়গা পবিত্র রাখতে হবে।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও পীরজাদা হারুনকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচশন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই অভিনেতা। নির্বাচনের দিন এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সদস্যদের। শুধু শিল্পী ছাড়া নির্বাচনের দিন আর কেউ এফডিসিতে প্রবেশ করতে না পারায় অপমানজনক দাবি করে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮ সংগঠন। তবে সে সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করে ঘোষণার এক দিন পরই নতুন সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নেন তিনি।
তবে এ নিয়ে চিন্তিত নন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ২০২২ সালের নির্বাচনের পর আমাকে সব সংগঠন আজীবন নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু তাদের চ্যালেঞ্জ করে ঘোষণার এক দিন পরই শুটিং করেছিলাম। তা ছাড়া গত জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে আমি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর চলচ্চিত্রে অভিনয় করব না। একটা সমিতি সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। তবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়াই ভালো।
কেন আর চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন না জানতে চাইলে পীরজাদা হারুন বলেন, চলচ্চিত্রে নোংরামির জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাকে অনেকেই বলে চলচ্চিত্রে অনেক নোংরামি হচ্ছে আপনি কেন অভিনয় করছেন। কাদা ছোড়াছুড়ি এমন পর্যায়ে চলে গেছে, এখন আর চলচ্চিত্র কেউ সাধারণভাবে নিচ্ছে না। চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের সেই সম্মান এখন আর নেই। সেটা আমরাই নষ্ট করেছি। চলচ্চিত্র নির্মাণ নেই কিন্তু কাদা ছোড়াছুড়ি চলছেই। তাই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর যে ১২০ রুম নিয়ে কথা সে সময়ের ফাইল চেক করলেই সব সত্য বেরিয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৪
এনএটি