অভিনয়, নির্মাণ আর মানবতার জয়গান গাওয়ার বাইরে আরেকটি কারণে অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফেলে দেওয়া তারকা হিসেবেও সবাই মনে রাখবে। ক্যান্সার থেকে বাঁচতে দুই বছর আগে নিজের স্তনজোড়া অপসারণ করান তিনি, এবার গর্ভাশয়ও অপসারণ করিয়ে ফেললেন হলিউডের বিখ্যাত এই অভিনেত্রী।
মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে গত ২৪ মার্চ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জোলি জানান, তার মা ও নানী কান্সারে মারা গেছেন। তার মায়ের রোগ ধরা পড়েছিল ৪৯ বছর বয়সে। তার শরীরেও ওই রোগের ‘বিআরসিএ১’ জিন রয়েছে। এ কারণে যে কোনো সময় স্তন বা গর্ভাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে তার। এ কারণে শরীরের এই অংশগুলোকে প্রিভেন্টিভ সার্জারি বা প্রতিরোধমূলক অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
চিকিত্সকদের মতে, জোলির স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৮৭ শতাংশ। আর গর্ভাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৫০ শতাংশ। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গর্ভাশয় ও ফ্যালোপিয়ান টিউব বাদ দেওয়ার পর জোলি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এই কাজটি করার কথা ভাবছিলাম। যদিও কঠিন কাজটা আগেই করেছি। কারণ গর্ভাশয় বাদ দেওয়ার চেয়ে স্তনজোড়া বাদ দেওয়া ছিলো বেশি জটিল। জানি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার এখনও কিছুটা সময় লাগবে। ’
দুই সপ্তাহ আগে পারিবারিক চিকিত্সক জোলির রক্ত-পরীক্ষা ফলাফল দেখে জানান, রক্তে গর্ভাশয়ের ক্যান্সার নির্ধারণে সহায়ক ‘সিএ-১২৫’ প্রোটিন স্বাভাবিক রয়েছে। কিন্তু বাকি আরও কিছু ফলাফল ইতিবাচক ছিলো না। এ কারণে আশঙ্কা করা হয়, সেটা ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায় হলেও হতে পারে। এরপরই স্বামী হলিউড সুপারস্টার ব্র্যাড পিটকে ফোন করে গর্ভাশয় অস্ত্রোপচারের ইচ্ছার কথা জানান জোলি।
পিট-জোলি দম্পতি এখন সুখী দাম্পত্য-জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের ছয় সন্তান। এর মধ্যে তিন সন্তান দত্তক। সুখের সংসার দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার ইচ্ছা থেকেই শরীরের স্পর্শকাতর অংশগুলো ফেলে দিলেন জোলি। এখন অভিনেয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন তিনি। জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হিসেবেও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত আছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ২০১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৫