ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

পর্দায় পুলিশকে ব্যবহারে অনুমতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫
পর্দায় পুলিশকে ব্যবহারে অনুমতি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছোট ও বড় পর্দায় পুলিশের চরিত্র যুক্ত করতে এবং পোশাক ব্যবহার করতে হলে অনুমতি নিতে হবে। এরই মধ্যে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতিতে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার এসএন জাহাঙ্গীর আলম সরকার।



পুলিশের চরিত্র ও পোশাক ব্যবহারে নির্মাতারা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেন না বলে জানা গেছে। বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে পুলিশ বিভাগ।

দেশের প্রবীণ, নবীন ও উঠতি অভিনয়শিল্পীরা নাটক-টেলিছবি ও চলচ্চিত্রে পুলিশের পোশাক পরে অভিনয় করে থাকেন। লক্ষ্য করে দেখা গেছে, ক্ষেত্রবিশেষে পুলিশের পদবির সঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের পরা পোশাকের মিল দেখা যায় না। অথচ পুলিশের পদবির সঙ্গে পোশাক ব্যবহারের বিষয়ে সরকার অনুমোদিত একটি 'ড্রেস রুল' রয়েছে। সে অনুযায়ী পুলিশ সদস্যরা র‌্যাংক ব্যাজ ব্যবহার করে পোশাক পরেন। এ কারণে এখন থেকে পুলিশের চরিত্রে অভিনয় ও পোশাক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

এসএন জাহাঙ্গীর আলম সরকার বিবিসিকে জানান, সৎ পুলিশ কর্মকর্তার সফল অভিযানের পাশাপাশি অসৎ কর্মকর্তার দুর্নীতির কাহিনীও তুলে ধরা হয়ে থাকে পর্দায়। পুলিশের এমন নেতিবাচক কিংবা হাস্যরসাত্মক উপস্থাপন জনমনে এই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভুল ধারণা জন্ম নেয় বলে তিনি মনে করেন।

পুলিশের চরিত্র দেখাতে হলে পুলিশ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেওয়ার নিয়ম নিয়ে বিনোদন অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অভিনেতা-নির্মাতা তারিক আনাম খান বাংলানিউজকে বলেছেন, ‘এ অবস্থায় জটিল প্রক্রিয়া সৃষ্টি হবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ আমাদের এখানে ব্যাপকহারে পুলিশের পোশাক ও চরিত্র ব্যবহার হয় নাটক-ছবিতে। ব্যক্তিগতভাবে আমি যেটুকু খেয়াল করেছি তাতে পুলিশকে খুব কমই খারাপ দেখানো হয়। এটাও ঠিক তাদেরকে পোশাক ও চরিত্রের সুষ্ঠু ব্যবহার হওয়া উচিত। যেমন লম্বা চুলের কোনো অভিনেতাকে পুলিশ সাজিয়ে দাঁড় করিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। আমার মনে হয়, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা নির্মাতাদের জন্য পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে পারেন। এতে জটিলতা থাকবে না। ’

নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই অনুমতির বিষয়টি জটিলতার মধ্যে ফেলে দেবে আমাদেরকে। একটা নীতিমালা থাকতে পারে যে, পুলিশকে বাজেভাবে উপস্থাপন করা যাবে না । তবে পুলিশকে আমরা সাধারণত ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করি। ’

নির্মাতা এসএ হক অলিক বলেছেন, ‘এটা যেহেতু রাষ্ট্রীয় বিষয় তাই এমন নিয়ম চালু হতেই পারে। যে চরিত্রটা আমরা পর্দায় উপস্থাপন করছি তার গ্রেড অনুযায়ী সব মেনে চলা হচ্ছে কি-না সেদিকে সবারই সজাগ থাকা দরকার। তবে এই অনুমতি নিতে গিয়ে কতটুকু সময় ক্ষেপন হবে তা ভাববার বিষয়। ’

নির্মাতা মাহমুদ দিদার এই প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন। তার মতে, ‘এটা খুবই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত। আমরা যেন কলোনিয়াল যুগে ফিরে যাচ্ছি! এমনিতেই সিনেমা বা টিভি শিল্প একটা ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের যেখানে মুক্তমনা হয়ে অনুপ্রাণিত করার কথা, উল্টো দেখি তারা পরিসরকে গন্ডির মধ্যে বেঁধে দিচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক নয়। ’

বাংলাদেশ সময় : ১৫৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।