ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

বিদায়বেলায় লেডি ম্যাকবেথের সঙ্গে দেখা

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫
বিদায়বেলায় লেডি ম্যাকবেথের সঙ্গে দেখা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কান (ফ্রান্স) থেকে: দুধে আলতা গা। একাধিক রঙে সাজানো পোশাক।

চুলগুলো পরিপাটী। বাদামি রঙা ওই কেশে দুই কাঁধ ঢাকা। ঠোঁট রাঙানো গোলাপি লিপস্টিকে। সবুজ চোখজোড়ায় শীতল প্রশান্তি। হাসি যেন ঝরণার ধারা। মারিয়ন কতিয়াঁ ঢুকতেই সংবাদ সম্মেলনে ছড়িয়ে গেলো ফরাসি সৌরভ। সঙ্গে চলে এলো আভিজাত্য!

আট বছর আগে অলিভিয়াঁ দাহানের 'লা ভিয়ে এন রোজ' ছবিতে অভিনয় করে অস্কারে সেরা অভিনেত্রী হন তিনি। ফরাসি ভাষায় নির্মিত ছবির জন্য কোনো অভিনেত্রীর অস্কারজয়ের এটাই একমাত্র ঘটনা। ফরাসি এই তারকা আসবেন জেনে প্রশ্ন করার ইচ্ছা আগেই সমন্বয়ককে জানিয়ে রেখেছিলাম। পাঁচজন সাংবাদিকের পর সেই সুযোগটা এলো।

লেডি ম্যাকবেথ কি আপনার স্বপ্নের চরিত্র? প্রশ্নটা শুনতেই পাশের বাড়ির মেয়ের মতো হাসলেন। ফরাসি ভাষায় উত্তর দিতে লাগলেন ৩৯ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। ট্রান্সলেটর যন্ত্র কানে দিয়ে সেগুলোর ইংরেজি শোনা গেলো। কতিয়াঁর কথাগুলো বাংলায় মোটামুটি এরকম- 'সব অভিনেত্রীই লেডি ম্যাকবেথের মতো এমন কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে চান। আমিও আশা করতাম, একদিন এমন চরিত্রে কাজ করার সুযোগ আসবে। লেডি ম্যাকবেথ আমার কাছে তেমনই। '
মাইক্রোফোন হাতেই থাকায় আরেকটা প্রশ্ন করে ফেললাম- আপনি ড্রামা স্কুলে ছিলেন। অভিনয় কি সত্যিই শেখা যায়? এবার একটু ভেবে তিনি বিজ্ঞের মতো উত্তর দিলেন- 'আমি মনে করি, অভিনয়টা শিখতে হয় না। তবে আবেগ ও অনুভূতি কীভাবে কাজে লাগাতে হয় তা শেখা প্রয়োজন। ড্রামা স্কুল থেকে সেটাই পেয়েছি আমি। '

টিম বার্টনের 'বিগ ফিশ' (২০০৩), রিডলি স্কটের 'অ্যা গুড ইয়ার' (২০০৬), জর্জ মিলারের 'হ্যাপি ফিট' (২০০৬), ক্রিস্টোফার নোলানের 'ইনসেপশন' (২০১০) ও 'দ্য ডার্ক নাইট রাইজেস' (২০১২), উডি অ্যালেনের 'মিডনাইট ইন প্যারিস' (২০১১), স্টিভেন সোগারবার্গের 'কন্টাজিওন' (২০১১) ছবিগুলোর সুবাদে হলিউডে ফরাসি অভিনেত্রীদের বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছেন তিনি।

কানে মারিয়নের অভিনীত 'রাস্ট অ্যান্ড বোন' ২০১২ সালে এবং 'টু ডেজ, ওয়ান নাইট' গত বছর অংশ নেয় প্রতিযোগিতা বিভাগে। এবার আছে 'ম্যাকবেথ'। এতে লেডি ম্যাকবেথ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। স্বামীকে তাড়িয়ে একসময় তিনি হয়ে ওঠেন স্কটল্যান্ডের রানী। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অপরাধবোধ তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। একসময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।

শেক্সপিয়র 'ম্যাকবেথ' লিখেছিলেন ষোড়শ শতাব্দীতে। এখনও এর প্রতি কৌতূহল কমেনি মানুষের। তাই আজও এটি সমকালীন। 'ম্যাকবেথ' নিয়ে হলিউডে এর আগে অরসন ওয়েলেস 'ম্যাকবেথ' (১৯৪৮), আকিরা কুরোসাওয়া 'থোর্ন অব ব্লাড' (১৯৫৭) এবং রোমান পোলনস্কি 'ম্যাকবেথ' (১৯৭১) সালে নির্মাণ করেন। এবারেরটি নির্মাণ করেছেন অস্ট্রেলীয় জাস্টিন কারজেল।

উৎসবের সমাপনীর আগের দিন ২২ মে শুরুতেই ছিলো 'ম্যাকবেথ'। গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয় সকাল আটটায়। উইলিয়াম শেক্সপিয়রের 'ম্যাকবেথ' অবলম্বনে নির্মিত ছবিটির মাধ্যমে ইতি ঘটলো ৬৮তম আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগের প্রদর্শনী! তার আগে সকাল সাড়ে ১০টায় ফটোকল ও এর আধঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলনে আরও আসেন ম্যাকবেথ চরিত্রের অভিনেতা মাইকেল ফাসবেন্ডার। মাইকেল ফাসবেন্ডারের প্রথম ছবি 'হাঙ্গার' ২০০৮ সালে কানে ক্যামেরা দ'র পুরস্কার জেতে।

(বাংলানিউজে কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সব খবর প্রকাশিত হচ্ছে www.rabbitholebd.com এর সৌজন্যে।

ফ্রান্স সময় : ১৫২২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৫
জেএইচ

** বাংলানিউজে কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সব খবর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।