ভীষণ জনপ্রিয়, প্রশংসিত ও প্রভাবশালী সংগীতশিল্পী প্রিন্স আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় নিজের বাড়িতে মারা গেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) পেইসলি পার্ক স্টুডিওসের পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে লিফটে প্রিন্সের মৃতদেহ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কার্ভার কাউন্টি শেরিফ জিম ওলসন। এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। শুক্রবার হবে ময়নাতদন্ত।
প্রিন্সের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গভীর বিষণ্নতা নিয়ে বলতে হচ্ছে, কিংবদন্তি, অনন্য শিল্পী প্রিন্স রজার্স নেলসন আর নেই। ’ খবর পেয়ে শত শত ভক্ত পেইসলি পার্কের বাইরে ভিড় করে।
নবীন-প্রবীণ শিল্পীরাও শোক-শ্রদ্ধা জানিয়ে যাচ্ছেন। প্রিন্সের সঙ্গে একসময় প্রেমের সম্পর্ক থাকা পপসম্রাজ্ঞী ম্যাডোনা তাকে স্বপ্নপ্রবণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি বিশ্বসংগীতের অবয়ব বদলে দিয়েছেন। গায়ক জাস্টিন টিম্বারলেক বলেন, ‘আমি স্তম্ভিত। স্তব্ধ। বিশ্বাস হচ্ছে না। ’ লায়োনেল রিচিও খবরটা বিশ্বাস করতে পারছেন না। তার কথায়, ‘আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। প্রিন্সের সঙ্গে কতো সুন্দর স্মৃতিই না আছে আমার। ’
রোলিং স্টোনস ব্যান্ডের মিক জ্যাগারের মতে, প্রিন্সের প্রতিভা ছিলো অসীম। প্রয়াত তারকাকে বিপ্লবী শিল্পী, মহান সুরকার ও বিস্ময়কর গীতিকার হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। গিটারশিল্পী স্ল্যাশ বলেন, ‘প্রিন্স ছিলেন আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে সেরা প্রতিভাবান সংগীতশিল্পীদের অন্যতম। সম্ভবত বিংশ শতাব্দীর সেরা। ’
গায়িকা অ্যারেথা ফ্র্যাঙ্কলিন বলেছেন, ‘এই মৃত্যু আকস্মিক আঘাতের মতো। সত্যিই পরাবাস্তব ব্যাপার মনে হচ্ছে। অনেক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। ’ যোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রিন্স অবশ্যই অতুলনীয় ছিলেন। সত্যিই প্রিন্স একজনই। ’ গায়ক বয় জর্জ বলেন, ‘সবচেয়ে খারাপ দিন আজ (বৃহস্পতিবার)। প্রিন্স শান্তিতে থাকো। আমি কাঁদছি। ’ সংগীতশিল্পী-অভিনেতা ওয়াইক্লেফ জিয়ান বলেন, ‘শান্তিতে থাকুন রাজা প্রিন্স। সংগীতশিল্পী হতে আমাকে অনুপ্রাণিত করার জন্য ধন্যবাদ। ’
প্রিন্সের জন্ম ১৯৫৮ সালে। অল্প বয়স থেকেই দেদার লিখেছেন ও গেয়েছেন তিনি। প্রথম গান লেখেন সাত বছর বয়সে। তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সংগীতায়োজক। বাজাতে পারতেন অনেক বাদ্যযন্ত্র। তার মোট ৩০টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।
আশির দশকে আন্তর্জাতিক সুপারস্টার হয়ে ওঠেন প্রিন্স। ‘১৯৯৯’, ‘পার্পল রেইন’, ‘সাইন ও’ দ্য টাইমস’ অ্যালবামগুলোর সুবাদে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পান তিনি। তার অভিনব সংগীতের প্রসার হয়েছে রক, ফাঙ্ক ও জ্যাজে। সংগীত জীবনে তার গানের ১০ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত দুটি গান হলো ‘লেটস গো ক্রেজি’ ও ‘হোয়েন ডোভস ক্রাই’।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
জেএইচ