মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় ঢাকার শাহবাগে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার চত্বরে উৎসব উদ্বোধন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
বিকেল পৌনে পাঁচটায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে উৎসবের মূল কেন্দ্র কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে। এখানে থাকবে প্রদীপ প্রজ্বলন, শুভেচ্ছা বক্তব্য ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। উদ্বোধনী ছবি জার্মানির ‘ফিডেলস্টিকস’।
উদ্বোধনী দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল চারটা ও সন্ধ্যা ছয়টায় মোট চারটি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী হবে। সারাদেশে মোট ১১টি ভেন্যুতে ৫৪টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ ছবি দেখানো হবে। সব আয়োজন অভিভাবকসহ শিশু-কিশোরদের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিটি ভেন্যু ও প্রতিটি প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার জন্য আয়োজকরা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এ আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত ছবি নিয়ে প্রতিযোগিতা বিভাগ। এতে ৬০টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিলো। এর মধ্য থেকে নির্বাচিত ২১টির প্রদর্শনী হবে। এগুলোর মধ্যে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও আর্থিক প্রণোদনা পাবে পাঁচটি চলচ্চিত্র। এজন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর। অর্থাৎ ছোটরাই বাছাই করবে ছোটদের নির্মিত সেরা ছবিগুলো।
প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত ছবিগুলোর নির্মাতাদেরকে উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুরাও উৎসব প্রতিনিধি হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছে। উৎসবের সাতদিন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে প্রতিনিধিদের জন্য। এ ছাড়া বিভিন্ন ইন্টারেক্টিভ সেশনে তারা জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ পাবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে উৎসব কমিটির মাধ্যমে মনোনীত বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের মোট ২০টি চলচ্চিত্র অংশ নেবে। এগুলোর জুরি বোর্ডে থাকবেন ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের শিক্ষক শেখর মুখার্জি, চলচ্চিত্রকার অমিতাভ রেজা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা সাবরিনা সুলতানা।
এবারও ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতাদের অংশগ্রহণে রয়েছে ‘ইয়াং বাংলাদেশি ট্যালেন্ট’ বিভাগ। রয়েছে সোশ্যাল ফিল্ম সেকশন, যেখানে আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা হবে। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো বিভিন্ন দেশের শিশুদের বানানো চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে একটি প্রতিযোগিতা বিভাগ। এখান থেকে একটি ছবি দেওয়া হবে পুরস্কার। উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৮ জন বিদেশি অতিথি প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেবেন।
আগামী ৩০ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটায় শওকত ওসমান মিলনায়তনে উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। এখানে থাকবেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফা মনোয়ার, চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের গুণীরা ও বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতরা।
ঢাকার বাইরে রাজশাহী ও রংপুরে উৎসব আয়োজন করছে চিলড্রেনস ফিল্ম সোসাইটি রাজশাহী ও চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি রংপুর। চট্টগ্রামে আয়োজন করছে চট্টগ্রাম ফিল্ম সোসাইটি। উৎসব উপলক্ষে একটি লোগো ফিল্ম তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশিত হচ্ছে স্মরণিকা, পোস্টার, টি-শার্ট, ব্যাগ ইত্যাদি।
জানা গেছে, উৎসবটির জন্য ১০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছেন আয়োজকরা। তবুও হতাশা ঝরলো উৎসব পরিচালক মোহাম্মদ আবীর ফেরদৌসের কণ্ঠে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় ঢাকার সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আয়োজনের ব্যাপকতার দিক দিয়ে এ আয়োজন শিশুদের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র উৎসব। অথচ এই বিশাল আয়োজনের প্রতি পৃষ্ঠপোষকদের আগ্রহ খুব কম। কিছু প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও একেবারে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যায়। এটা খুব দুঃখজনক। তবুও শিশু-কিশোরদের জন্য প্রতিবারের মতো বিভিন্ন দেশের নানান স্বাদের চলচ্চিত্র দেখার সুযোগ করে দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছি না আমরা। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৬
জেএইচ